ছেলে ও তার বন্ধুকে আটকের পর ঘুষ না পেয়ে হত্যা করে মরদেহ গুমের অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ১৬ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মা হিরা খাতুন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন উপ-পরিদর্শক (এসআই), চারজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও নয়জন কনস্টেবল।
আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন তিনি। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের শাহিনুর রহমানের আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী হিরা খাতুন যশোর শহরের শংকরপুর পশু হাসপাতাল এলাকার তৌহিদুল ইসলাম খোকনের পরিত্যক্তা স্ত্রী।
আসামিরা হলেন- থানার এসআই এইচ এম শহিদুল ইসলাম, আমির হোসেন ও হাসানুর রহমান, এএসআই রাজন গাজী, সেলিম মুন্সী, বিপ্লব হোসেন ও সেলিম আহম্মেদ এবং কনস্টেবল আরিফুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, আবু বক্কার, মাহমুদুর রহমান, রাজিবুল ইসলাম, টোকন হোসেন, ড্রাইভার কনস্টেবল রমজান ও মিজান শেখ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বাদিনী হিরা খাতুন একজন স্বামী পরিত্যক্তা নারী। তিনি একমাত্র ছেলে সাইদকে নিয়ে থাকতেন। গত ০৫ এপ্রিল সাইদ ও তার বন্ধু শাওন যশোর পৌর পার্কে বেড়াতে গেলে এসআই এইচ এম শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে পরিবারের লোকজনকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এসআই এইচ এম শহিদুল ইসলাম বাদিনীকে ডেকে বলেন, ছেলেকে ছাড়াতে হলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে দু’জনকেই মেরে মরদেহ গুম করে দেওয়া হবে।
পরে গত ০৭ এপ্রিল বাদী পত্রিকা পড়ে জানতে পারেন, তার ছেলে সাইদ ও তার বন্ধু শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন। পরে আদালতে গিয়ে জানতে পারেন, পুলিশ এ বিষয়ে মামলা করেছে। এতে বলা হয়েছে- আটক সাইদ ও শাওন পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন।
এ ঘটনার পর থেকে তাদের আর খোঁজ মেলেনি। পরে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন ভুক্তভোগীরা।
বাদিনীর ধারণা, দাবিকৃত ঘুষের দুই লাখ টাকা না পেয়ে আসামিরা (পুলিশ) ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাইদ ও শাওনকে হত্যার পর মৃতদেহ গুম করে ফেলেছেন।
জেলা প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম