জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংসতা ও জাতিগত নিধন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বিবৃতি দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর (কার্যত সরকারপ্রধান) অং সান সু চি।
তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের এই বিবৃতির ফলে সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হতে পারে।
আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) সু চি’র কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
এর আগে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংসতা ও জাতিগত নিধন বন্ধের জোরালো আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গত সোমবার (৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বলপ্রয়োগ ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে এ আহবান জানানো হয়।
বিবৃতিতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের কর্মকাণ্ডে মিয়ানমারের সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি একজন বিশেষ উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ওই বিশেষ উপদেষ্টার পক্ষ থেকে মহাসচিবের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশের প্রস্তাব।
আগস্ট মাসে নতুন করে শুরু করা সহিংসতার মুখে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার কঠোর সমালোচনা করে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ারও আহবান জানানো হয় ইতালির সেবাস্তিয়ানো কারদি’র পাঠ করা ওই বিবৃতিতে।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ওই বিবৃতিতে দেওয়া সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের মধ্যে আরো রয়েছে রাখাইনে বেসামরিক প্রশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, আইনের শাসন নিশ্চিত করা, নারী-শিশু ও নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর অধিকারসহ মানবাধিকার নিশ্চিত করা এবং জাতি, ধর্ম ও নাগরিকত্বের বৈষম্য বিলোপের আহবান।
একই সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের প্রতি রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
আরো জানানো হয়েছে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পৌছানোর ও সংবাদ কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ নির্বিঘ্ন করার আহবান।
মিয়ানমারের দুই পরীক্ষিত মিত্র রাশিয়া ও চীন থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা পরিষদের এই বিবৃতিকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা মনে করা হচ্ছে। ভেটো ক্ষমতার অধিকারি ওই দুই দেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাবে সাড়া না দিলেও বিবৃতিতে একমত পোষণ করেছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম