একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোনার চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আদালত ২০ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আদালতে প্রসিকিউটর ছিলেন রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ রানা।
রেজিয়া সুলতানা চমন জানান, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পলাতক এক আসামির বিরুদ্ধে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ০৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মামলার আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- নেত্রকোনার দুর্গাপূর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মৃত নবী হোসেনের ছেলে মো. খলিলুর রহমান (৭২), তার ভাই মো. আজিজুর রহমান (৬৫), একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আশক আলী (৮২) এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মৃত কদর আলীর ছেলে মো. শাহনেওয়াজ (৮৮)।
শুরুর দিকে মামলায় আসামি ছিলেন পাঁচজন। এর মধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। খলিলুর রহমান ছাড়া বাকিরা গ্রেফতার রয়েছেন।
তাদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ৩০ জানুয়ারি শেষ হয়। একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার দুইজন সহ মোট সাক্ষী ৮২ জন। অভিযুক্তরা ১৯৭১ সালে দুর্গাপূর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগে ২২ জনকে হত্যা, ১ জনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দুইজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪/১৫টি বাড়িতে লুটপাট এবং ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. বদরুল আলম এ মামলার তদন্ত করেন।
আসামিদের মধ্যে খলিলুর রহমান ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চণ্ডিগড় ইউনিয়নে আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হন। বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।
আজিজুর রহমান, আশক আলী ও শাহনেওয়াজ পাকিস্তান মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তারাও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম