জরুরি সেবা সার্ভিস ‘৯৯৯’ চালু হচ্ছে আগামী সপ্তাহেই। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এ জরুরি সেবার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এরইমধ্যে আবদুল গনি রোডের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে এই সেবা সার্ভিসের দফতরও খোলা হয়েছে। জরুরি সেবা সার্ভিসগুলোর প্রয়োজনে ‘৯৯৯’-এ কল করে সেসব সেবা নিতে পারবেন যেকোনও নাগরিক। পুলিশ সদর দফতরের কর্মকর্তারা এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
গত বছরের (২০১৬ সাল) ১১ অক্টোবর ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস-৯৯৯’ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। ওই বছরই তখন নাগরিকদের পক্ষ থেকে ৯৯৯-এ বেশিরভাগ কল এসেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা নেওয়ার বিষয়ে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গত ৮ অক্টোবর (২০১৭ সাল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এ সার্ভিসের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ সদর দফতরকে। পরে পুলিশের একজন অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে একটি টিম এই সেবা কার্যক্রম চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরইমধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, খুব সহজে সরকারিভাবে জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ৯৯৯ নামে এই জরুরি সেবা সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। চালুর পর এই সেবা সার্ভিস সেন্টার সারা দেশের মানুষের তথ্য ও সেবা পাওয়ার একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। ৯৯৯ সার্ভিসের জন্য রয়েছে সুবিশাল তথ্য ভাণ্ডার সংবলিত মোবাইল অ্যাপস ও ওয়েবসাইট। যা ব্যবহার করে জরুরি মুহূর্তে সহযোগিতা খুঁজে পাওয়ার ওপরই শুধু নয়, অন্যান্য বিষয়েও একজন নাগরিক কিভাবে সরকারি সেবা পেতে পারেন সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেওয়া হবে।
৯৯৯ সার্ভিসের হেল্প ডেস্ক মোবাইল অ্যাপস বা ওয়েব সাইট ব্যবহার করে সরাসরি কথা বলা ছাড়াও প্রতিনিধির সঙ্গে লাইভ চ্যাট করা যাবে। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অধিদফতর দ্বারা পরিচালিত কল সেন্টারগুলোতে সরাসরি কল করা যাবে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন হাসপাতালের প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর ও লোকেশন ম্যাপও রয়েছে। যে কেউ নিজের লোকেশনের তথ্য দিলে এই ফিচারটি নিকটবর্তী পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও লোকেশন ম্যাপ প্রদর্শিত হবে।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ‘৯৯৯’ চালুর কাজ চলছে। অভ্যন্তরীণভাবে সেটার পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। কিছু টেকনিক্যাল বিষয় আছে। সেগুলোর কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এ সার্ভিসের উদ্বোধন করবে। আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে এর উদ্বোধনের কথা রয়েছে।’’
সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘আপাতত তিনটি জরুরি সেবা সার্ভিস দেওয়া হবে এই ৯৯৯ সেন্টারের মাধ্যমে। পুলিশের সাহায্যের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দেওয়া হবে। যেকোনও মোবাইল নম্বর থেকে সম্পূর্ণ টোল ফ্রি কল করে বাংলাদেশের নাগরিকেরা এই সেবা নিতে পারবেন। ৯৯৯ সার্ভিসের প্রশিক্ষিত প্রতিনিধিরা জরুরি মুহূর্তে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স সেবাদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন।’
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম