রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আইন মন্ত্রণালয় পালন করতে পারে না মন্তব্য করে সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেছেন, সংবিধান যে ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত করেছে সেই জায়গায় রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে আইন মন্ত্রণালয় হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের নিজ কার্যালয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
একই সঙ্গে বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধির প্রকাশিত গেজেটের গোড়াতেই গলদ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেনে এ সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, আমি অবাক হয়েছি, জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনকে সরকার আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে গেছে। যদিও এটা করা উচিত ছিল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। কিন্তু তা না করে ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী করা হয়েছে। ১৩৩ বিধি প্রযোজ্য হয় প্রজাতন্ত্রের সরকারি কর্মচারীদের জন্য।
যে মামলার কারণে (মাসদার হোসেন মামলা) নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা করার নির্দেশনা আসে সেই মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এম আমীর-উল ইসলাম।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয় ঐক্যমতে আসার পর গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা ২০১৭ এর গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে সরকার।
বিধিমালায় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতিকে করা হয়েছে। এছাড়াও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ অর্থ রাষ্ট্রপতি বা তৎকর্তৃক সংবিধানের ৫৫ (৬) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রণীত রুলস অব বিজনেসের আওতায় সার্ভিস প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে বিচারিক আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ১২ দফার মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। গত বছরের ২৮ আগস্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ওই বছরের ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দেয়।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম