বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া - ফাইল ছবি

চতুর্থ দিনের যুক্তিতর্কে খালেদার খালাস চেয়েছেন আইনজীবী

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে চতুর্থ দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেছেন তার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবারও যুক্তি উপস্থাপন করা হবে।

আজ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ দিন ধার্য করেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তি উপস্থাপনে আদালতে আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছেন। তাই এ মামলা থেকে তার খালাস চাই।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে বুধবার বেলা ১১টা ১৪ মিনিটে ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরে বেলা ১১টার ১৮ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আজকের দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। পরে খালেদা জিয়া আদালত ত্যাগ করেন। বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে মামলা দু’টির বিচার চলছে।

যুক্তি উপস্থাপনে আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, খালেদা জিয়া কুয়েতের টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, এ অভিযোগ প্রমাণশূন্য। শুধু তাই নয়, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুয়েত থেকে আসা টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এর কোনো প্রমাণ নেই। মামলার কোনো সাক্ষীও এ বিষয়ে কিছু বলেননি।

তিনি আরো বলেন, মামলার এফআইআর-এ আছে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এটিও ঠিক নয়। এফআইআর-এ কথা যে বেদের মতো বিশ্বাস করতে হবে তাও ঠিক নয়।

আব্দুর রেজাক খান আজ তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর খালেদা জিয়ার পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত।

গত ২১ ডিসেম্বর মামলা দুটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২৬-২৮ ডিসেম্বর এ দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলায় বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে আসামি করা হয়।

এতিমদের জন্য বিদেশি থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

জজকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম