দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এসি ল্যান্ডের কক্ষে বসা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জের ধরে জ্যেষ্ঠ এক আইনজীবীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয়ার ঘটনায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী এসি ল্যান্ড বিরোদা রানী রায়সহ তিনজন আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন।
তলবে হাজির হওয়া অন্য দু’জন হলেন- ভুক্তভুগি আইনজীবী নিরোদ বিহারী রায় এবং ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম সম্পাদক ড. বদরুল হাসান কচি।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ হাজির হলে আদালত এই তিনজনকে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) স্বপক্ষে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সময় আদালত এসি ল্যান্ড বিরোদা রানী রায়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ক্ষমতার আইনগত ব্যবহার করতে হবে, ক্ষমতা থাকলেই ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না।
আদালত আরও বলেছেন, আইনজীবীরাও কোর্টের অংশ। আইনজীবীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে বার কাউন্সিলে জানানো উচিৎ ছিল, তা না করে আপনি নিজে নিজেই বিচার করা উচিৎ হয়নি।
ভুক্তভুগি আইনজীবী নিরোদ বিহারী রায়কে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, আপনারা সিনিয়র আইনজীবী হয়েছেন, আপনাদেরও মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করা উচিৎ ছিল।
আজ আদালতে এসি ল্যান্ডের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মামুন মাহাবুব সঙ্গে বিরোদা রানী রায় স্বপক্ষে কথা বলেন। অন্যদিকে ভুক্তভুগি আইনজীবী নিরোদ বিহারী রায় নিজেই স্বপক্ষে কথা বলেন। এছাড়া ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম’র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট কুমার দেবুল দে এবং অ্যাডভোকেট মুরাদ সারোয়ার ভূঁইয়া।
প্রসঙ্গত, জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের বরাত দিয়ে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির ও কাজী হেলাল উদ্দিন আদালতের নজরে আনলে স্বপ্রণোদিত হয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
সম্প্রতি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এসি ল্যান্ডের কক্ষে বসা নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেন সহকারী কমিশনার বিরোদা রানী রায়।
গত ১২ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) একটি নামজারির মামলায় শুনানি করতে গেলে অ্যাডভোকেট নিরোদ বিহারী রায়কে ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাজা দেওয়ার সময় এসি ল্যান্ড তার বক্তব্যে, ‘আমি আমার ক্ষমতা দেখালাম, পারলে আপনি আপনার ক্ষমতা দেখান।’ এমন উক্তি করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই আইনজীবী।
পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে স্থানীয় আইনজীবী সমিতি। এ ঘটনায় বিরোদা রানী রায়কে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। যদিও এখনও নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম