ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায় পুন:র্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাষ্ট্রপরে আবেদনের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের দেয়া বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন সমিতির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট অজিউল্লাহ।
আজ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সমিতির উত্তর হলে এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আওয়ামী সমর্থক আইনজীবী সমিতির এ নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী অজিউল্লাহ বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর আপিলের রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ রিভিউ আবেদন দাখিল করেছেন। সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রিভিউ দাখিল করা যে কারও সাংবিধানিক অধিকার। লিগ্যাল কোরাম অনুযায়ী সংক্ষুব্ধরা রিভিউ দায়ের করতে পারেন। কিন্তু এ রিভিউ নিয়ে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। তারা রিভিউ শুনানি নিয়ে সংশয়মূলক বক্তব্য দিয়েছেন। সরকার নাকি বিচার বিভাগকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যেতে চায়-এমন আশঙ্কার কথাও প্রকাশ করেছেন। তাদের এ ধরনের বক্তব্য বেআইনী, অনভিপ্রেত, ও অনাকাঙ্খিত। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বক্তব্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল বাসেত মজুমদার, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহ-সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সদস্য মো হাবিবুর রহমান (হাবিব) প্রমুখ।
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুন:র্বিবেচনা চেয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই রিভিউ আবেদন নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর সমিতির দণি হলে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতা ও সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
ওই দিন তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল এবং সরকারের বর্তমান কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে, তারা বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত করতে চায়। তারা যেভাবে চায় সেভাবেই আদালতকে রায় দিতে হবে। যদি তা না করা হয়, বিচারপতি সিনহার মত তাদেরকেও একই পরিণতি বরণ করতে হবে। এভাবেই তারা অন্যান্য বিচারপতিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। রিভিউ আবেদন যেভাবে দাখিল করা হয়েছে, তাতে মনে হয়েছে সরকার সুপ্রিমকোর্টকেও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়।
তাদের এ বক্তব্য উল্লেখ করে আইনজীবী অজিউল্লাহ আরও বলেন, আইন অনুযায়ী রিভিউ আবেদনটি দাখিল করায় এটি এখন বিচারাধীন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এখন বিষয়টি বিচারাধীন। এ ধরণের বিচারাধীন বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে কোনো রকম বক্তব্য দেয়া, সংশয় প্রকাশ করে বক্তব্য দেয়ার, বা আপিল বিভাগ কী রায় প্রদান করবেন, সে বিষয়ে কোন বক্তব্য বা মন্তব্য অধিকার রাখেন না। ২৫ ডিসেম্বর ছুটির দিন ছিল। ছুটির দিনে নিজেদের বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাদের দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে সমিতির কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ ধরনের কোনো বিষয় সমিতির রেজুলেশনে পাস হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম