বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আইন করে কর্মক্ষেত্রে নারীর চেয়ে পুরুষের বেতন বা মজুরি বেশি দেওয়াকে নিষিদ্ধ করলো আইসল্যান্ড। সদ্য শুরু হওয়া বছরের প্রথম দিন থেকেই উত্তর আটলান্টিকের এই দ্বীপরাষ্ট্রে এ সংক্রান্ত আইন কার্যকর হয়েছে।
নতুন এই আইন অনুযায়ী, ২৫ জন কর্মী রয়েছে এমন যেকোনও কোম্পানি বা সরকারি সংস্থাকে আইসল্যান্ড সরকারের এই নারী-পুরুষ সমবেতনের সনদ গ্রহণ করতে হবে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, কোনও কোম্পানি বা সরকারি সংস্থাও এই আইন বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হবে।
আইসল্যান্ডে কার্যকর হওয়া নতুন এই আইন প্রসঙ্গে দেশটির নারী অধিকার সংগঠনের সদস্য ড্যাগনি অস্ক আবাডোট্টির পিন্ড বলেন, নতুন এই আইনের আওতায় প্রতিটি কোম্পানি বা সংস্থাকে তাদের প্রতিটি কাজের মূল্যায়ন করতে হবে এবং তাদের নিয়ম মেনে দেখাতে হবে যে তারা নারী-পুরুষকে সমান বেতন বা মজুরি দিচ্ছে। এরপরই তারা সরকারের কাছ থেকে সমবেতনের সনদ অর্জন করতে সক্ষম হবে।
এই নারী অধিকারকর্মী আরও বলেন, ‘নারী ও পুরুষের জন্য বেতন বা মজুরি সমান হতে হবে, এমন আইন দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু এখনও নারী ও পুরুষের আয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। নতুন এই আইনটি মূলত নারী ও পুরুষের সমান মজুরি বা বেতন নিশ্চিত করতে একটি কৌশল হিসেবে কাজ করবে।’
তিন লাখ ২৩ হাজার জনগোষ্ঠীর আইসল্যান্ড অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দেশ। গত ৯ বছরে এই দেশটি লৈঙ্গিক সমতার ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। দেশটির সংসদেও প্রায় অর্ধেক সদস্যই নারী। নতুন এই আইন কার্যকরের মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যে দেশটি নারী-পুরুষের মধ্যে বেতন বা মজুরির পার্থক্য সম্পূর্ণ দূর করার লক্ষ্য নিয়েছে।
দেশটির মধ্য-ডানপন্থী সরকারের সমর্থনে নতুন এই আইন কার্যকর হলেও দেশটির বিরোধী দলগুলোও একে স্বাগত জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের র্যাংকিং অনুযায়ী, লৈঙ্গিক সমতাবিধানের ক্ষেত্রে আইসল্যান্ডের পরেই রয়েছে নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, রুয়ান্ডা ও সুইডেন। ১৪৪টি দেশের এই তালিকায় সবচেয়ে নিচে রয়েছে ইয়েমেন। সর্বনিম্ন অবস্থানে থাকা পাঁচ দেশের বাকি চার দেশ হলো পাকিস্তান, সিরিয়া, সৌদি আরব ও চাদ। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৭২।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম