সমন্বিত সার্কুলারের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার (সাধারণ) ও অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ পরীক্ষার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ তিনটি কারণে ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
কারণ তিনটি হলো, সমন্বিত সার্কুলারের মাধ্যমে সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকসহ মোট আটটি ব্যাংকের পরীক্ষার্থীদের জন্য রাজধানীতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬১টি ভেন্যু ইতোমধ্যেই ভাড়া করা হয়েছে; দ্বিতীয়ত, ২০১৬ সালে নিয়োগ পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত আবেদনকারীদের পোস্ট ২০১৭ সালের নিয়োগ সার্কুলার থেকে আলাদা রাখা হয়েছে; তৃতীয়ত ইতোমধ্যেই ব্যাংক পরীক্ষায় অংশ নিতে ২ লাখ ৩২ হাজার পরীক্ষার্থী ঢাকায় অবস্থান করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এক আবেদন শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তিন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার মুনিরুজ্জামান। এছাড়াও রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জিয়াউর রহমান ও আইনজীবী রাশেদুল খোকন।
পরে মুনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনটি কারণ উল্লেখ করে ব্যাংকগুলোর পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। এর ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত এই তিন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় আর কোনও বাধা নেই।’
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সমন্বিত সার্কুলারের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার (সাধারণ) ও অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ পরীক্ষার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক খোকন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম ও মীর্জা সুলতান আল রেজা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
পরে রাশেদুল হক খোকন বলেন, ২০১৬ সাল বিভিন্ন ব্যাংক পৃথক পৃথক সার্কুলার দিলেও পরীক্ষা না নিয়ে ২০১৭ সালে সমন্বিত সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে ২০১৭ সালের এই সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে ২৮ পরীক্ষার্থী রিট দায়ের করেন। এই রিট পিটিশনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলে সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকে নিয়োগের জন্য ২০১৭ সালের জারি করা সার্কুলার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ২০১৭ সালের সমন্বিত সার্কুলারের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার (সাধারণ) ও অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ পরীক্ষার সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে আজ চেম্বার আদালতের আদেশের পর রাষ্ট্রায়ত্ত ওই তিন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার বাধা কাটলো।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম