জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তবে এখনও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ৩ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়া রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে পৌঁছান।
গত বছর ১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এর আগে গত ২০, ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩ ও ৪ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা। ৪ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় ১০ ও ১১ জানুয়ারি পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
গত বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন কালে আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, ‘‘এখন সময় ১২টা, কিভাবে আদলত চলে? আমি (আদালত) সাড়ে ৯টায় আসতে পারি, আপনারা আসতে পারেন। কিন্তু উনি (খালেদা জিয়া) আসতে পারেন না কেন? এভাবে আদালত চলতে পারে না। আগামীকাল থেকে আদালত সাড়ে ১০টায় বসবে।’
এর জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহম্মদ আলী আদালতকে বলেন, ‘আপনি মার্শাল ল শুরু করেছেন। একই মামলায় সপ্তাহে তিনটি তারিখ দিচ্ছেন।’
এ জে মোহম্মদ আলী বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার নথিটা গোঁজামিল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। কারণ এই ফান্ডের টাকা কোথায় ডিসট্রিবিউট করা হয়েছে সেটা প্রমাণ হয়নি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি। তাই এ মামলা চলতে পারে না’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া কোনও কাগজে সই করেছেন কিনা- আদলতে সে বিষয়ে কোনও সাক্ষী দেখাতে পারেননি। এমনকি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফরমে তার সইও নেই।’
পরে আদালতের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি মাত্র তিন কথার মামলা। মামলাটিতে আপনি (আদালত) দেখবেন খালেদা জিয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছেন কিনা, টাকা বণ্টন করেছেন কিনা এবং এই টাকা জালিয়াতি হয়েছে কিনা?’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
মামলায় বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে আসামি করা হয়।
২০০৯ সালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।
জজকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম