জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচজনের ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এদিকে হাইকোর্টের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন। ৯ জানুয়ারি এ মামলার শুনানি শেষ হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মো. রইছ ওরফে সোহান, জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের মো. রাশেদুল ইসলাম রাজু এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম। এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম রাজু ছাড়া বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ (পলাতক) ও নাজমুস সাকিব তপুর দণ্ড বহাল রয়েছে।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বাকি চারজন খালাস পেয়েছেন। তারা হলেন- প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ, পরিসংখ্যান বিভাগের মাজহারুল ইসলাম, শফিউল আলম সেতুও অভিনন্দন কুণ্ডু অভি। এদের মধ্যে শুধু অরূপ পলাতক রয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস।
আসামিপক্ষে ছিলেন আব্দুল মতিন খসুর, এসএম আবুল হোসেন, খায়রুল আলম, ফাহিমা রাব্বি ও রানা কাউসার।
পলাতকদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন শফিকুল ইসলাম।
নিজ কার্যালয়ে রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নিজের স্বস্তির কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন ‘পুলিশি প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল এই হত্যা পরিকল্পিত। একটি সংঘর্ষপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে এ ধরনের হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। এই রায়ের ফলে সবার কাছে বার্তা যাবে যে, হত্যা করলেই পার পাওয়া যায় না।’
মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন নিয়ম অনুসারে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা যাবে।’
একইসঙ্গে এ মামলায় পলাতকদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, মামলায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি জুবায়ের আহমেদকে কুপিয়ে জখম করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ভোরে জুবায়ের মারা যান। জুবায়ের পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মদিনাবাগনা বলাপাড়ার তোফায়েল আহমেদের ছেলে।
এ ঘটনায় ৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান বাদী হয়ে খন্দকার আশিকুল ইসলাম আশিক, রাশেদুল ইসলাম ও খান মো. রইসের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম