উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করায় বেসরকারি সংস্থা প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহমদকে হাইকোর্টের একমাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতে কাজী ফারুকে আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন।
আদালতে কাজী ফারুকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম (অ্যাটর্নি জেনারেল)। সঙ্গে ছিলেন রমজান আলী শিকদার।
এর আগে মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করায় বেসরকারি সংস্থা প্রশিকার সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহমদকে একমাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ ওয়াদুদের কাছে প্রশিকার চেয়ারম্যানের কার্যালয় বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এ আদেশ প্রতিপালন করে ১৫দিনের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টে বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এমএ ওয়াদুদ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সিরাজুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন বারেক চৌধুরী, নুরুল আমীন, নুরুল ইসলাম মাতুব্বর ও মো. সোলায়মান।
আর কাজী ফারুকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম (অ্যাটর্নি জেনারেল), জেড আই খান পান্না, মাহবুব আলী, এএম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রমজান আলী শিকদার।
মঙ্গলবার আইনজীবী সোলায়মান জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৪ মে সংস্থাটির গভর্নিং বডির এক সভায় চেয়ারম্যান পদ থেকে কাজী ফারুককে অপসারণ করে এমএ ওয়াদুদকে চেয়ারম্যান করা হয়।
পরদিনই অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন কাজী ফারুক। একই সঙ্গে এমএ ওয়াদুদের কমিটির উপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। এ আবেদন ওই বছরের ৩১ মে খারিজ করে দেন আদালত।
এ আদেশের বিরুদ্ধে জজ আদালতে আবেদন করেন তিনি। এ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দিলে ফারুক হাইকোর্টে আবেদন করেন। পরে ওই বছরের ১১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে নিম্ন আদালতে বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেওয়া হয়।
রায়ে প্রশিকা ভবনে কোনো সমাবেশ বা র্যালি না করতে কাজী ফারুকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেও হেরে যান কাজী ফারুক। এরপর ২০১২ সালে আবার প্রশিকা ভবনে অবস্থান নেন কাজী ফারুক। পরবর্তীতে কাজী ফারুকের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি আদালত অবমাননার মামলা করেন এমএ ওয়াদুদ।
ওই রুলের উপর শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রায় দেন। রায়ে সাত দিনের মধ্যে এমএ ওয়াদুদকে কার্যালয় বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কাজী ফারুককে ৭ দিনের দেওয়ানি কারাদণ্ড ও ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পাশাপাশি এ আদেশ কার্যকর করে ১৫দিনের মধ্যে সংশিষ্ট আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন কাজী ফারুক।
আপিল বিভাগ মামলাটি পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন। এ নির্দেশে হাইকোর্টে শুনানি শেষে ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার রায় দেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম