পুলিশ (প্রতীকী ছবি)
পুলিশ (প্রতীকী ছবি)

আটকের পর নির্যাতনের অভিযোগে ছয় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

আটকের পর হেফাজতে রেখে যুবককে নির্যাতনের অভিযোগে এক পরিদর্শকসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছে নির্যাতিত যুবক ইয়াছিন আওয়াজ ভূইয়া রওনকের (২৬) বড় ভাই ইয়াছিন সাখাওয়াত ভূইয়া।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম এবং ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কনস্টেবল মাহবুবুর রহমান, ফিরোজ মিয়া, নায়েক হামিদুর রহমান, এএসআই শীলাব্রত বড়ুয়া ও নায়েক আমির।

মামলায় চমেক পুলিশ ফাঁড়ি ও পাঁচলাইশ থানায় কর্মরত অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বাদির আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত পিবিআইকে পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে পরীক্ষার মাধ্যমে রওনকের শরীরে আঘাতের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্ত ও হাসপাতালের প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে আদালতের দাখিলের জন্য বলেছেন মহানগর হাকিম।

গত ২০ জানুয়ারি রাতে চমেক হাসপাতাল এলাকায় আহত অবস্থায় গ্রেফতার হন রওনক। তিনি নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গ্রেফতারের পর তার উপর নির্যাতনের অভিযোগ করে ইতোমধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনও করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় রওনক চমেক ‍হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় কয়েকজন লোকের সঙ্গে সাদা পোশাকের এক পুলিশ সদস্যের কথা কাটাকাটি চলছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য এতে যোগ দেয়। পাঁচলাইশ থানা থেকেও পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে।

এসময় রওনক দ্রুত হেঁটে ওই স্থান ত্যাগ করতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক জহিরুলের নির্দেশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে আটক করে বেধড়ক পেটাতে থাকে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, পুলিশ সদস্যরা রওনককে মাটিতে ফেলে বুকের উপর জুতা দিয়ে নির্যাতন করেন। একজন পুলিশ সদস্য অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করতে উদ্যত হলে রওনক বাম হাত দিয়ে সেটা ঠেকান। এতে রওনকের হাত ভেঙে গেছে। আরেকজন তার হাতের আঙ্গুলের নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করেন।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন, ২০১৩ এর ১৫ ধারায় অভিযোগ এনেছেন বাদি।

মামলার এজাহারে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত রওনকের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে না দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রভাবে রওনককে সুচিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগও এতে করা হয়েছে। বাংলানিউজ