একবিংশ শতাব্দীর উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
তিনি বলেন, বিচারকদের উন্নত ও আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে তারাই বিচার বিভাগের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারাও নিজস্ব চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে বিচার বিভাগে নিত্যনতুন পরিবর্তন আনতে পারবেন। আর এভাবেই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ই-জুডিসিয়ারি গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবে সরকার।
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সিনিয়র সহকারী জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ১৩৮তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গতকাল বুধবার (২৪ জানুয়ারি) তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে বিচার বিভাগকেও ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণাটি শুধু আইসিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য বিচার বিভাগের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে অনেক পরিকল্পনা নিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২০টি জেলায় নবনির্মিত ভবনে বিচারিক কাজ চলছে। জেলা জজ আদালতগুলো পর্যায়ক্রমে ঊর্ধ্বমুখী সস্প্রসারণ করা হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার বিচারকদের বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনছে। পাঁচ শতাধিক বিচারককে অষ্ট্রেলিয়া থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হবে। ১৫ জন বিচারকের একটি ব্যাচ জাপান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এসেছেন এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য বিচারকদেরকেও জাপানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে
বর্তমানে দেশের আদালতগুলোয় প্রায় ৩৩ লাখ মামলা বিচারাধীন আছে- এ বিষয়টি বিচার বিভাগ ও সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেওয়ানি কার্যবিধি ও অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তিতে সহায়ক আইন করা হয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম