জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আত্মসাতের যে মামলাটির রায় আজ (বৃহস্পতিবার) হওয়ার কথা, সেটি দায়ের হয়েছিল ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়।
মামলার অভিযোগ ছিল খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার স্বামীর নামে প্রতিষ্ঠিত এই দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলা দায়েরের নয় বছর পর আজ (বৃহস্পতিবার) এর রায় দেওয়ার কথা।
তবে রায় হলেও আরো চারটি দুর্নীতির মামলা লড়ে যেতে হবে খালেদা জিয়াকে। যে মামলাগুলোর তিনটিই দায়ের করা হয় ২০০৭ পরবর্তী তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করা হয় ২০০৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়।
মামলার মূল অভিযোগ- প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় মিসেস জিয়া তার ক্ষমতা অপব্যবহার করে এই ট্রাস্টের জন্য ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার তহবিল জোগাড় করেছিলেন।
খালেদা জিয়ার একজন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিবিসিকে জানিয়েছেন এ মাসের ২৫ ও ২৬ তারিখে এই মামলার চূড়ান্ত সওয়াল জবাবের দিন ধার্য করা হয়েছে। তারপরই হয়তো বিচারক রায়ের দিন চূড়ান্ত করবেন।
নাইকো মামলা
কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সাথে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চুক্তি করে রাষ্ট্রের প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা লোকসান করার এই মামলাটি হয় ২০০৮ সালে সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়। মামলায় শেখ হাসিনাকেও আসামী করা হয়েছিল, কারণ এই চুক্তিটি প্রথম করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
পরে ২০০৯ সালে সরকার প্রতিষ্ঠা করার পর শেখ হাসিনা আদালতের মাধ্যমে এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে যান। তবে মামলাটি রয়ে যায় এবং আসামী হিসাবে থেকে যান খালেদা জিয়া।
গ্যাটকো মামলা
ঢাকার কমলাপুরে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে গ্যাটকো নামে একটি কোম্পানিকে দেওয়ার অভিযোগে এই মামলাটিও হয় ২০০৭ পরবর্তী সেনা-সমর্থিত সরকারের সময়।
বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে দায়ের করা এই মামলার অভিযোগ ছিল -চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি শর্ত ভেঙ্গে সরকারের চোখের সামনে অতিরিক্ত এলাকায় কয়লা খনন করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে, এবং খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন।
নাইকো, গ্যাটকো এবং বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় পুলিশ এখনও চার্জশিট দেয়নি।
বিএনপি সবসময় অভিযোগ করে, এই সব দুর্নীতি মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং হয়রানিমূলক। আইনজীবী মাসুদ তালুকদার বলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৭-০৮ সালে তাদের বিরুদ্ধে করা এরকম শত শত মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করে নিলেও, বিএনপির করা আবেদনগুলো বিবেচনা করেনি।
দুর্নীতির এই পাঁচটি মামলা ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরো ৩১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি মামলা নাশকতার। সেইসাথে রয়েছে মানহানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের বেশ কিছু মামলা। ১৫ই আগস্টে তার জন্মদিনটি ভুয়া – এই অভিযোগেও একটি মামলা রয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে।