হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গুলিভর্তি পিস্তলসহ যাত্রী আটকের পর বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় ওই সময়ের উত্তরা জোনের ডিসি বিধান চন্দ্র ত্রিপুরাকে সতর্ক করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলাবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তলবের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কর্মকর্তা বিধান ত্রিপুরা এ দিন আদালতে হাজির হয়ে বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি পিস্তলের লাইসেন্স দেখানোয় মানবিক কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। পরে আদালত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকতে বিধান ত্রিপুরাকে সতর্ক করেন।
আদালতে বিধান ত্রিপুরার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন ও অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ।
পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, আদালত বিধান ত্রিপুরাকে সতর্ক করে রুল নিস্পত্তি করে দিয়েছেন।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি গুলিভর্তি পিস্তলসহ হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রী আটকের পর বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার ঘটনায় ওই সময়ের উত্তরা জোনের ডিসি বিধান ত্রিপুরাকে তলব করেন হাইকোর্ট।
ওইদিন বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার ঘটনায় বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আজম মিয়া ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত সাহার বিরুদ্ধে আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল।
কিন্তু আদেশ না দিয়ে আদালত পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়নের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখন তো আইননুসারে না হয়ে টেলিফোনেই সব হয়। উত্তরা জোনের ডিসি বিধান ত্রিপুরার মৌখিক নির্দেশেই গুলিভর্তি পিস্তলসহ আটক যাত্রীকে ছেড়ে দেয়া হয়।’ এরপর আদালত উত্তরা জোনের ডিসি বিধান ত্রিপুরাকে তলব করেন।
গত ২৪ জানুয়ারি এ ঘটনার জন্য আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিমানবন্দর থানার ওসি নূর-ই-আজম মিয়া ও এসআই সুকান্ত সাহা। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের ভর্ৎসনা করেন।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবরটি আদালতের নজরে আনেন আইন কর্মকর্তা ফরহাদ আহমেদ। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারির পাশাপাশি বিমানবন্দর থানার ওসি ও এসআইকে তলব করেন।