খ্রিস্টান ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য কুরআন মুখস্থ করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে লেবাননের তিন মুসলিম কিশোরকে। নিজ ধর্মগ্রন্থ কুরআনের দ্বিতীয় সূরা দুই শতাধিক আয়াত বিশিষ্ট আল ইমরান মুখস্থ করতে পারলেই মিলবে তাদের মুক্তি।
লেবাননে খ্রিস্টান বিচারক জোসেলাইন মাত্তার দেওয়া অভিনব শাস্তির খবর এসেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইনডিপেনডেন্টে।
এই ধরনের শাস্তি দেওয়ার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির প্রশংসা পেয়েছেন এই নারী বিচারক; তার প্রশস্তি চলছে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্টের মা মেরিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল ওই তিন কিশোরের বিরুদ্ধে। গত সপ্তাহে বিচারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আইন অনুযায়ী এর শাস্তি তিন বছর কারাবাস হলেও দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সৃষ্টি করলেন বিচারক জোসেলাইন।
কেন এই ধরনের শাস্তি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এই বিচারক। রায়ে তিনি বলেছেন, যিশু খ্রিস্ট ও মাতা মেরি মুসলিম ধর্মাবলম্বীর কাছেও পবিত্র। মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআনেও তাদের কথা আছে। কুমারী মেরিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে ওই তিন কিশোর কার্যত নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসের বিপরীতেই অবস্থান নিল বলে বিচারকের পর্যবেক্ষণ। তাই ইসলাম ধর্মে মেরি সম্পর্কে যে শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে, তা উপলব্ধির জন্য তাদের আল ইমরান সূরা মুখস্থ করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বিচারক বলেছেন, তাদের জন্য ‘কারাগার হবে বিদ্যালয়’।
লেবাননে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বাস; অতীতের বিরূপ অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির যে কোনো ঘটনা ঠেকাতে রাষ্ট্রের তৎপরতা রয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির প্রেসিডেন্ট হবেন একজন খ্রিস্টান, প্রধানমন্ত্রী হবেন একজন সুন্নি মুসলিম এবং পার্লামেন্টের স্পিকার হবেন একজন শিয়া মুসলিম।
জোসেলাইন মাত্তার রায়ের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি বলেছেন, এটা বিচারকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলছেন, জোসেলাইনের এই রায় অনুসরণ করা যায় অন্য অনেক মামলার ক্ষেত্রেও। বিডিনিউজ