আদালতের মামলা প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) সম্পর্কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘এডিআর-এর মাধ্যমে দুটি পক্ষই বিজয়ী হয় বা পরাজিত হয়। কিন্তু মামলার ক্ষেত্রে একপক্ষ জয়লাভ করে আর অন্য পক্ষ হেরে যায়। মামলায় যুক্তিতর্ক দিয়ে আইনজীবী বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন। অন্যদিকে এডিআর-এ দুটি পক্ষই মন খুলে কথা বলতে পারে। তাই এই প্রক্রিয়াটি বিরোধ নিষ্পত্তিতে দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য।’
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল পূর্বানীতে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির দ্বিতীয় ধাপের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্ধোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে শুধু “আমি” ব্যবহার হয়। কিন্তু এডিআর-এ ব্যবহৃত হয় “আমরা”। অর্থাৎ পুরো একটি যৌথ বিষয়। এখানে সামাজিক সব সঙ্গতি খুঁজে পাওয়া যায়। এমনকি শেষ পর্যন্ত অভিযোগ থেকে ক্ষমাও পাওয়া যায়। কিন্তু মামলার ক্ষেত্রে শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার সেখানে ক্ষোভ প্রকাশ করে আপিলের সুযোগ থাকে। কিন্তু এডিআর-এ আপিলের সুযোগ নেই। তাই বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে নিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘মামলায় সবকিছু ইংরেজিতে থাকে। এমনকি সবকিছু লিখিত ও দলিলভিত্তিক। কিন্তু এডিআর-এ নিজস্ব ভাষায় ও মৌখিকভাবে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা হয়।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সরাসরি এক নাটিকা উপস্থাপনের মাধ্যমে একটি কমলা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।
মেডিয়েশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সার্টিফায়েড মেডিয়েটর (আইআইএএম) অ্যাডভোকেট সমরেন্দ্র নাথ গোস্বামীর সভাপতিত্বে ‘ইন্ট্রোডাকশন টু ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন অ্যান্ড মেডিয়েশন’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাটার্ড ইনস্টিটিউট অব আরবিট্রেটর্স (ইউকে)-এর কোর্স ডিরেক্টর মি. ইনবাভিজান, আন্তর্জাতিক মেডিয়েটর কে এস শর্মা ও অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর ইরাম মজিদ।
সুপ্রিম কোর্ট ও দেশের বিভিন্ন বার থেকে ২০ জন ডেলিগেট এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ নেন।