জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেছেন। ৩১টি যুক্তিতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে মামলার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণের শুনানি হবে আজ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণ এবং জামিন হবে কিনা তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দেশবাসী।
আইনজীবী জানান, যেসব যুক্তি তুলে ধরা হবে তার মধ্যে রয়েছে :
এ মামলায় খালেদা জিয়া নিম্ন আদালতেও জামিনে ছিলেন। তখন তিনি জামিনের নিয়ম ভঙ্গ করেননি। ফলে তিনি উচ্চ আদালতেও জামিন পেতে পারেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী একজন বয়স্ক নারী। তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। এই পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী তিনি জামিন পেতে পারেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে বিশ্বাসভঙ্গের দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। এটি আইন অনুযায়ী সঠিক হয়নি। যে আইনে মামলা, সেই আইনে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মনে করেন, তিনি এই মামলায় চূড়ান্তভাবে খালাস পাবেন। তাই তিনি জামিন পেতে পারেন।
মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরে মামলার বাদী হারুন অর রশিদ নিজের তদন্ত করেন এবং নিজেই আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার নাম আনেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগির হোসেন লিওন বলেন, ‘এসব কারণ দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন চাওয়া হবে। আমরা আশা করি, তিনি জামিন পাবেন এবং এই মামলা থেকে আদালত তাঁকে খালাস দেবেন।’
গত সোমবার রায়ের সত্যায়িত কপি হাতে পান বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান নথিপত্রসহ ১২২৩ পৃষ্ঠার আপিল দায়ের করেন। আপিলে ৪৪টি যুক্তি দেখানো হয়। এতে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা স্থগিত চাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণের শুনানি হবে। আমরা আশা করছি, আপিল মঞ্জুর হবে এবং তিনি জামিনও পাবেন। পাঁচ বছরের সাজা স্বাভাবিকভাবেই জামিনযোগ্য।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির জন্য পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে জেল ও প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করে জরিমানা করেন। রায়ের দিন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি কারাগারেই আছেন।