কর ফাঁকির অভিযোগে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সব ব্যাংক হিসাব তিনদিনের জন্য ফ্রিজ (জব্দ) রাখতে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও ইকবাল কবীর লিটনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এর আগে, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লি. এর সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটরটির বিরুদ্ধে ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে আজ সকালে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এনবিআর-এর একটি ফিল্ড অফিস বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ না করে ফাঁকি দিয়েছে রবি। এর জন্য রবির সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন আগামী তিনদিনের জন্য বন্ধ রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
কর ফাঁকির অভিযোগ অস্বীকার করে রবির জনসংযোগ ও কর্পোরেট দায়িত্ব বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট একরাম কবির বলেন, ভ্যাট নিয়ে এনবিআর-এর সাথে তাদের এই বিরোধ দীর্ঘদিনের। তবে এলটিইউ বলেছে, রবির সাথে তাদের এ ধরনের কোনো পুরনো বিরোধ নেই।
এলটইউ-এর কমিশনার (ভ্যাট), মো. মতিউর রহমান বলেন, অন্য অপারেটররা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ করলেও রবি তা করেনি। রবির সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে তারা বকেয়া কর পরিশোধের অনুরোধ করেছেন জানিয়ে বলেন, “তারা কথা শোনেনি। এই অবস্থায় আইন অনুযায়ী আমি কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।”
মতিউর রহমান বলেন “তারা যদি আগামীকালই ভ্যাট পরিশোধ করে দেয়, আমরা তাদের ব্যাংক হিসাবগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেব।”
এলটিইউ-এর অতিরিক্ত কমিশনার গত ৭ ফেব্রুয়ারি রবির কর্পোরেট অফিস পরিদর্শনের পর এনবিআর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করল।
এনবিআর বলছে, অফিস ও স্থাপনা ভাড়া, সিম বিক্রি এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট হিসেবে ১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে যা রবি সময়মত পরিশোধ করেনি।