দেশের গণপরিবহনে ৯৪ শতাংশ নারী কোনো না কোনো সময় মৌখিক, শারীরিক এবং অন্যান্য যৌন হয়রানির শিকার হন। এরমধ্যে ৬৬ শতাংশ নারী জানায়, ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দ্বারাই নারীরা বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
আজ মঙ্গলবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্র্যাকের ‘নারীর জন্য যৌন হয়রানি ও দুর্ঘটনা মুক্ত সড়ক’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এ তথ্য উঠে আসে।
গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন- ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হোসনে আরা বেগম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) রির্সাচ অ্যাসোসিয়েট কবিতা চৌধুরী।
গণপরিবহনে নারী নির্যাতনে কারণ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ না থাকা, বাসে অতিরিক্ত ভিড়, যানবাহনে পর্যাপ্ত আলো না থাকা, তদারকি অভাবে নারীদের ওপর যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে সংখ্যাগত ও গুণগত ৪১৫ জন নারী অংশগ্রহণ করেন। নিম্ন ও নিম্ন মধ্য আয়ের পরিবারের নারীদের সড়ক ও পরিবহন ব্যবহারের অভিজ্ঞতার আলোকে গবেষণাটি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গণপরিবহন ব্যবহারকারীদের উত্তরদাতারা বলেন, শারীরিক যৌন হায়রানির মধ্যে রয়েছে ইচ্ছাকৃত স্পর্শ করা, চিমটি কাটা, কাছে ঘেঁষে দাঁড়ানো, আস্তে ধাক্কা দেওয়া, নারীদের চুল স্পর্শ করা, কাঁধে হাত রাখা, হাত, বুক বা শরীরের অন্যান্য অংশ দিয়ে নারীর শরীর স্পর্শ করা ইত্যাদি।
এসব ঘটনায় ৮১ শতাংশ নারী চুপ থাকেন। ৭৯ শতাংশ আক্রান্ত হওয়ার স্থান থেকে সরে আসেন।
অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, নারীদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের চেয়ে অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেলেও কর্মক্ষেত্রে এখনও তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই গবেষণা সুপারিশের ভিত্তিতে তারা এ ব্যাপারে জনসচেতনতা পাশাপাশি আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের ওপর জোর দাবি জানান।
ব্রাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির ডিরেক্টর আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, টেকসই উন্নত লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) নারীর জন্য নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এজন্য এসডিজি বাস্তবায়নে নারীর জন্য যৌন হয়রানির মুক্ত সড়ক ব্যবস্থা রাখতে হবে।
গণপরিবহনে নারীরা ‘যাত্রী’ দ্বারা বেশি নির্যাতিত হয়। যৌন হয়রানি কমাতে গণপরিবহনে নারী চালক রাখার ব্যবস্থা করলে এ ধরণের ঘটনা কমবে এমটাই মনে করেন তিনি।
ব্র্যাক নারী চালক তৈরি করতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে বলেও জানান নাজমুল হুসেই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সৈয়দ সাদ আন্দালীব, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির প্রোগ্রাম হেড হাবিবুর রহমান প্রমুখ।