পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার (১৯ মার্চ) দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ রোববার (১৮ মার্চ) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ দিন সকালে প্রথমে জামিনের বিপক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল বিষয়ে শুনানি হয়। খানিক বিরতি দিয়ে জামিনের স্থগিতাদেশ বিষয়ে শুনানি হয়। পরে আদালত এ বিষয়ে কাল আদেশ দেওয়ার কথা জানান।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার জামিন আদেশের বিরুদ্ধে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম। এরপর জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী।
এর আগে গত ১৪ মার্চ বুধবার আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আজ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে সিপি দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার দুদক ও রাষ্ট্র সিপি দায়ের করে। এ দুই আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিনের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ অব্যাহত রাখার আবেদন জানানো হয়।
এ ছাড়া গত বুধবার আদেশের পর পরই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল বিভাগের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একটি আবেদন জানান। সেদিন চেম্বার বিচারপতি এই আবেদনটিও রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা সিপির সঙ্গে আজ রোববার শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী সবগুলো আবেদনই আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে।
এর আগে ১২ মার্চ এই মামলায় হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন। ১৩ মার্চ ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। পরে গত বুধবার আপিল বিভাগ দুদকের বক্তব্য শুনেই জামিন স্থগিতের আদেশ দেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্য না শুনেই জামিন স্থগিত করায় তার আইনজীবীরা আদালতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর এবং তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া আত্মসাতের অভিযোগের সমপরিমাণ টাকা সবাইকে অর্থদণ্ড দেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের এই রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়। পরের দিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে নথি তলব করে অর্থদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শেষ হয়।