ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী ফরিদা আখতারের দায়ের করা রিভিশন মামলা বিশেষ জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকা ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা বদলীর এ আদেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ফরহাজ মজহার অপহরণ মামলায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম অপহরণের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। একই সঙ্গে মিথ্যা অপহরণের মামলা করে বিভ্রান্ত ও হয়রানির করার অভিযোগে ওই দস্পতির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা দায়েরের অনুমতি প্রার্থণা করেন। এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর সিএমএম আদালতে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ফরহাদ মজহার ও তার স্ত্রী মানবাধিকার কর্মী ফরিদার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন দাখিল করেন। এরপর ৩১ ডিসেম্বর আদালত ওই দম্পত্তিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়। পুলিশের ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তারা রিভিশন মামলাটি দায়ের করেন।
ফরহাদ মজহার গত ৩ জুলাই ভোরে রাজধানীর শ্যামলী এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার পর অপহরণ হন বলে আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তার স্ত্রী ফরিদা আখতার। পুলিশ প্রথমে ফরহাদ মজহারের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে খুলনায় তার অবস্থান শনাক্ত করে। পরে খুলনার পরিচিত একটি রেস্টুরেন্টে তিনি খাবার খেয়েছিলেন বলে প্রমাণ মেলে। এর পর খুলনা থেকে ঢাকার পথে একটি বাসে ‘গফুর’ নামে টিকিট কাটেন ফরহাদ মজহার। যশোরের অভয়নগর এলাকায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয়।
পরদিন সকালে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এই লেখককে। আদাবর থানা থেকে গত ৪ জুলাই দুপুরে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপহৃত হয়েছিলেন মর্মে আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাকে নিজ জিম্মায় বাড়ি ফেরার অনুমতি দেন। গত ৬ জুলাই নাজমুস সাদাত সাদী হানিফ পরিবহনের এক কর্মচারী এবং গত ১০ জুলাই অর্চনা নামে এক নারী সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
ফরিদা আখতার মামলায় অভিযোগ করেন, আমার স্বামী সাধারণত খুব ভোরে ঘুম থেকে জাগেন এবং লেখালেখি করেন। সকাল ৫টার দিকে আমার ঘুম ভাঙার পর আমি ওনাকে লেখার টেবিলে না দেখতে পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি এবং সারা ঘরে খুঁজতে থাকি। ইতোমধ্যে সকাল ৫টা ২৯ মিনিটে আমার স্বামী তার ফোন থেকে আমাকে কল দেন। তিনি ভয়ার্ত কণ্ঠে বলেন, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, মেরে ফেলবে।’ সঙ্গেসঙ্গে ফোনটি কেটে যায়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই সারাদিনে ফরহাদ মজহারের ফোন থেকে আরও চারবার কল পান ফরিদা। সেসব ফোনালাপে ফরহাদ মজহার জানান, অপহরণকারীরা ৩৫ লাখ টাকা চেয়েছে, ওই টাকা পেলে তারা তাকে ছেড়ে দেবে।