গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) এবং কারাবন্দি আসামিদের আপিলের ওপর শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবারের (২২ মার্চ) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার ২১৫ নম্বরে রয়েছে মামলাটি।
নিয়ম অনুযায়ী নিম্ন আদালতে কোনো মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে সে মামলার নথি সংশ্লিষ্ট আদালত আপনাআপনিই হাইকোর্টের পাঠিয়ে থাকে। আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত।
গত বছরের ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির সর্বোচ্চ শাস্তি দেন। আদালত গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এরইমধ্যে পেপারবুক তৈরি করা হয়। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেওয়া হয়েছে।
মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন একটি মামলা দায়ের করেন। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয় জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।