জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে না পারায় পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আজ বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর বকশীবাজার কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে অবস্থিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এই মামলায় যুক্তিতর্কের দিন ধার্য ছিলো বুধবার। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে হাজির করেননি। উনি (খালেদা জিয়া) জেল কাস্টডিতে আছেন। তাকে হাজির করার দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের। যেহেতু তাকে হাজির করা হয়নি তাই আমরা আর্গুমেন্ট করতে পারিনি। ৫ এপ্রিল পরবর্তী দিন ধার্য আছে। আশা করি সেদিন তাকে হাজির করা হবে।
কেন হাজির করেনি বা কি ব্যাখ্যা কারা কর্তৃপক্ষ দিয়েছে, জানতে চাইলে কাজল বলেন, সেটা আদালত ও কারা কর্তৃপক্ষের বিষয়। আমি প্রসিকিউশন, আসামিকে আনা হলে আমি আমার কাজ করবো। এটা আমার বিষয় নয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আমরা দেখেছি কাস্টডিতে লেখা আছে তিনি অসুস্থ হওয়ায় তাকে আদালতে আনা হচ্ছে না। কিন্তু কি ধরনের অসুস্থতা তা আদালত কিংবা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা স্পষ্ট করে জানেন না। এজন্য আমরা তার আইনজীবী হিসেবে উদ্বিগ্ন।
আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বাড়ানোর আবেদন করেন। মোশাররফ হোসেন এর বিরোধিতা করে বলেন, খালেদা জিয়া অন্য একটি মামলায় কারাগারে আছেন। কারাগারে থাকার কারণে তাঁর জামিনের কোনো সুযোগ নেই। তখন সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, জামিনের সঙ্গে কারাগারে থাকা বা না থাকার কোনো সম্পর্ক নেই।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক আখতারুজ্জামান বলেন, আগামীকালও এ মামলার শুনানির দিন ছিল। কিন্তু শুনানি হবে না। আগামী ৫ এপ্রিল এ মামলার শুনানির দিন ধার্য হলো। একই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া এই মামলার জামিনে থাকবেন বলে তিনি আইনজীবীদের জানান।
সকালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হবে না বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে আনা হচ্ছে না।
এদিকে সকাল থেকে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে ঘিরে বকশীবাজার প্যারেড মাঠ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ সদস্যরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান আদালতে হাজির হন। নিরাপত্তার কারণে আশপাশের দোকানপাট থেকে শুরু করে রাস্তাগুলোতেও জনসাধারণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এর আগে (১৩ মার্চ) খালেদা জিয়াকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ২৮ ও ২৯ মার্চ আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন আদালত।