বেশ কয়েকটি দলের সমর্থনে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে অপসারণে সংসদে প্রস্তাব তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস।
প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে করা অভূতপূর্ব একটি পিটিশন লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী সদস্যদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে বলে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতাদের বরাতে জানিয়েছে এনডিটিভি।
পিটিশনে সম্মতি জানিয়ে এরইমধ্যে ২০ সাংসদ স্বাক্ষর করেছেন; আরও অনেকের স্বাক্ষর জমা পড়ার অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন এনসিপি নেতা মাজেদ মেমন।
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন তিন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ, কপিল সিবাল ও আহমেদ পাটেল। এনসিপির পাঁচ সাংসদের স্বাক্ষরও জমা পড়েছে।
মেমন ও এনসিপি নেতা ডিপি ত্রিপাঠি প্রধান বিচারপতিকে অপসারণে বিরোধীদের প্রচেষ্টার কথা নিশ্চিত করলেও কংগ্রেস নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
“দেরিতে হলেও বৃহত্তম বিরোধীদল কংগ্রেস ভারতের প্রধান বিচারপতিকে অভিশংসিত করতে প্রচেষ্টা শুরু করেছে,” মঙ্গলবার বলেন মাজেদ মেমন।
তার সহকর্মী ত্রিপাঠি বিচারপতি সংক্রান্ত পিটিশনটিতে স্বাক্ষর করার কথা জানিয়ে বলেন, “প্রক্রিয়া চলছে। সিপিএম এবং সিপিআই-র সাংসদরাও এতে স্বাক্ষর করেছেন।”
সমাজবাদী পার্টিও (এসপি) বুধবার পিটিশনে সমর্থন দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।
“বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও প্রশ্নহীন অখণ্ডতা এনে দিতে অভিশংসনের যে চেষ্টা চলছে সমাজবাদী পার্টি তার সঙ্গে আছে,” বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন এসপি নেতা ঘনশ্যাম তিওয়ারি।
ত্রিপাঠি বলছেন, কেবল দুর্নীতি নয়, প্রধান বিচারপতির প্রতি অভিযোগ ‘এর চেয়েও গুরুতর’। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য প্রধান বিচারপতিকে ‘বিপজ্জনক’ অ্যাখ্যা দিয়ে চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতির লেখা এক চিঠির প্রতিও ইঙ্গিত করেন তিনি।
স্পর্শকাতর মামলাগুলো প্রধান বিচারপতি তার পছন্দের বিচারপতিদের দিচ্ছেন এবং জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের অবজ্ঞা করছেন বলে বিরোধীদের পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে। জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ চার বিচারপতির লেখা চিঠিতেও দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল।
প্রধান বিচারপতিকে অভিশংনের প্রস্তাব আনতে হলে লোকসভার অন্তত ১০০ সাংসদের স্বাক্ষর প্রয়োজন, রাজ্যসভায় লাগবে ৫০ জনের।
এ বিষয়ে বিভিন্ন দলের নেতারা এরইমধ্যে রাজ্যসভার বিরোধী নেতা গুলাম নবী আজাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি ও সিপিএমের নেতারাও কয়েকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের সঙ্গেও এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। বিডিনিউজ