বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেনের ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার (২ এপ্রিল)। ১৯৮৬ সালের আজকের দিনে তিনি পরলোকগমন করেন।
১৯২৮ সালে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া এই বিচারপতি তদানীন্তন জেলা ও দায়রা জজ মরহুম সৈয়দ তাসাদ্দুক হোসেন ও মরহুমা বেগম আসমা হোসেনের জ্যেষ্ঠপুত্র।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তান হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তার পেশাগত জীবনের সূচনা করেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারকার্যে অংশ নেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন।
বিচারপতি হিসেবে আইনের শাসন ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, মানবাধিকার, গণতন্ত্র প্রভৃতি ভাবাদর্শ প্রচার ও রক্ষায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যার পরপরই সুপ্রীমকোর্টের বিচারক হিসেবে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি সাহসী ও সোচ্চার ভূমিকা নেন। ১৯৮৪ সালের ৮ জানুয়ারি এক সামরিক আদেশবলে তাকে সুপ্রীমকোর্টের বিচারকের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
তবে পেশাগত জীবনে অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে তাকে “সমাজসেবায় স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়। এছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার” হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে। যদিও দুটো সম্মাননাই তিনি পেয়েছেন মরণোত্তর।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃস্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠক ছিলেন। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমী (বাফা) এবং পাকিস্তানের আর্ট কাউন্সিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ‘বাংলার কথা’ (১৯৮৬) তার প্রকাশিত গ্রন্থ। তিনি ইন্টারন্যাশনাল ‘ল’ এ্যাসোসিয়েশন এমিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্ট-এর বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ছিলেন।