সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে দলীয়করণের ঊর্ধ্বে রেখে পরিচালনা করবেন বলে আবারও অঙ্গীকার করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় দায়িত্ব অর্পণকালে গতকাল বুধবার (৪ এপ্রিল) বিকালে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বিগত দিনে আমরা ওয়াদা করেছিলাম সুপ্রিমকোর্ট বারকে দলীয়করণের ঊর্ধ্বে রেখে পরিচালনা করব। সেই ওয়াদা আমরা পালন করেছি। ভবিষ্যতেও সেই চেষ্টা করব।
সভায় বর্তমান ও সাবেক কমিটির সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিমকোর্টে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অতীতে যেমন সোচ্চার ছিলাম ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকব।
এর আগে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ সেশনের নতুন কমিটি দায়িত্ব নেয়। সভায় নতুন কমিটিকে ফুল দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ২০১৭-১৮ কমিটির নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ সময় উপকমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মসিউজ্জামানসহ বিপুলসংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সম্পাদকের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং বার্ষিক হিসাব পেশ করেন সহসভাপতি ওয়াজি উল্লাহ।
সভায় ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমাকে এ পর্যন্ত ৬ মেয়াদে সমিতির সম্পাদক করা হয়েছে। এর জন্য আমি সব আইনজীবীকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনারা যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন, তা শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি।
আমাদের প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে। আমরা চেষ্টা করেছি সব সময় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতিতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার।
খোকন বলেন, সুপ্রিমকোর্টে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অতীতে যেমন সোচ্চার ছিলাম ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও থাকব। আমাদের মধ্যে ঐক্য ও সম্মানবোধ যেন থাকে।
তিনি আরও বলেন, অতীতে আমরা সব বিদায়ী প্রধান বিচারপতিকে বিদায় জানিয়েছি। কিন্তু এবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে বিদায় জানাতে পারিনি। কারণ তিনি পদত্যাগ করেছেন বিদেশে।
উল্লেখ্য, গত ২১ ও ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোট ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১০ পদে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। ফলাফল অনুযায়ী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন টানা দ্বিতীয়বার সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন টানা ষষ্ঠবারের মতো সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচন উপকমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মসিউজ্জামান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে নির্বাচিত অন্যরা হলেন, সহসভাপতি ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া ও এম গোলাম মোস্তফা, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার, সহসম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন এবং সদস্যপদে মাহফুজ বিন ইউসুফ, সাইফুর আলম মাহমুদ, মো. আহসান উল্লাহ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
এছাড়া সরকার সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন, সহসম্পাদক পদে মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক রাজু এবং সদস্যপদে ব্যারিস্টার আশরাফুল হাদী, শাহানা পারভীন ও শেখ মোহাম্মদ মাজু মিয়া।