মুক্তিযুদ্ধের যে সশস্র সংগ্রাম সে সংগ্রামের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, আমরা সেই যুদ্ধে জয় লাভ করেছি ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার যে লড়াই সেই লড়াইয়ের কোন নির্দিষ্ট সময় সীমা নেই, সেই লড়াই চালিয়ে যেতে হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।
আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা গবেষণা সংসদের আয়োজনে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির অর্জন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২১ জন গবেষক এই সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন।
তুরিন আফরোজ আরও বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে যে স্বাধীনতা এনেছে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করবার দায়িত্ব আমাদের। সেই স্বাধীনতা রক্ষা করবার জন্য সবার আগে আমাদের বন্ধুর পাশাপাশি শত্রু চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ই ডিসেম্বর মোহাম্মদপুরে বদর কম্যান্ডার মুজাহিদের নেতৃত্বে যে সমাবেশ হয় সেখানে তাদের প্রতি নির্দেশ ছিলো সমাজের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে যাওয়ার। সেই থেকে আজ অবধি তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে মিশে গিয়ে তারা তাদের পাকিস্তানি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
ব্যারিস্টার তুরিন যুদ্ধাপরাধীদের পরবর্তী প্রজন্মের বিষয়ে সাবধান করে দিয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের পরবর্তী প্রজন্মরা দেশে বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না সাপের বাচ্চা সাপই হয়। এই সমস্ত সাপেরা বাংলাদেশকে দংশন করার অপেক্ষায় আছে। সুযোগ পেলেই বিষ দাঁত বসিয়ে দিবে। তাই এরা যেন সরকারী বা বেসরকারি কোন উচ্চ পদে চাকরি করতে না পারে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে ভিয়েতনামের মত আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
প্রফেসর আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ, গবেষক ড. নূহ-উল-আলম লেনিন, কবি, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক সোহরাব হাসানসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।