প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আইন পেশায় জ্ঞান ও মেধা দিয়ে মক্কেলদের সহযোগিতা করতে হবে। এজন্য বেশি বেশি জ্ঞানের চর্চা করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের (আইনজীবীদের) কাছ থেকে পেশাগত অসদাচারণমূলক ব্যবহার কখনোই কাম্য নয়।’
আজ শনিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে নতুন আইনজীবীদের মধ্যে সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘বার (আইনজীবী) ও বেঞ্চ (বিচারালয়) একে অপরের সম্পূরক। তবে কার্যক্রমের ভিন্নতা থাকবে। কিন্তু তাদের হাতে হাত দিয়ে একসঙ্গে হাঁটতে হবে। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কাজ করা যাবে না।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নতুন আইনজীবীদের শপথবাক্য পাঠ করান।
বার কাউন্সিলের সনদ নেওয়া নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে হলে প্রয়োজন অধ্যবসায়। নিরলস শ্রম, সততা ও পেশার প্রতি আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করলে তবেই সফলতা পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, একজন আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে, গুণগত মান উন্নয়নে কঠোর সংগ্রাম করতে হবে। নিবিড় গবেষণা, সমস্যাগুলো গভীরভাবে চিন্তা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যোগাযোগ ও আলোচনার দক্ষতা অর্জন করতে হবে, ক্লায়েন্ট কাউন্সেলিং এবং প্রমাণাদি সংগ্রহ ও পেশের দক্ষতা অর্জন করতে হবে, ভাষাগত উৎকর্ষ অর্জন করতে হবে।
আইনি ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় জনগণের প্রতি আইনজীবীদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীদের কখনই তাদের শপথ ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়।
আইনজীবীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আইনের শাসন সুরক্ষিত করায় আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আপনারা সহযোগিতা করছেন।
বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান বলেন, নবীন আইনজীবীদের সিনিয়রদের সঙ্গে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।
বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-বার কাউন্সিলের সদস্য ও কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুএমপি, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী শ.ম. রেজাউল করিম ও বার কাউন্সিলের সদস্য জেড আই খান পান্না।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বার কাউন্সিলের সদস্য ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যরিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বার কাউন্সিলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা, এনরোলমেন্ট কমিটির সদস্য বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু।
এ অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল বার কউন্সিলে যুক্ত হওয়া ৩ হাজারের বেশি সদস্যের হাতে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির সনদ তুলে দেওয়া হয়।