বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে মোট ৬২ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। মনোনয়ন দাখিলের শেষদিনে গত ৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বার কাউন্সিল দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল ৩ এপ্রিল থেকে ৮ এপ্রিল বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আগামী ১৫ এপ্রিল বিকেল ৪টায় মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে এবং প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ আগামী ১৮ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৪ মে।
সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। মোট ৪৩ হাজার ৭১৩ জন আইনজীবী তিন বছরের জন্য এই নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বা সরকার সমর্থক এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থক আইনজীবীদের প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্যানেলভুক্ত নেতারা হলেন, বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদারকে, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, জেড আই খান পান্না, পরিমল চন্দ্র গুহ ও শ ম রেজাউল করীম। এই সাতজন সাধারণ সদস্য পদে লড়বেন।
আর সাতটি আঞ্চলিক সদস্য পদে আছেন, ‘এ’ গ্রুপ থেকে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ‘বি’ গ্রুপ থেকে মো. কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, ‘সি’ গ্রুপ থেকে ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ‘ডি’ গ্রুপ থেকে এ এফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, ‘ই’ গ্রুপ থেকে পারভেজ আলম খান, ‘এফ’ গ্রুপ থেকে মো. ইয়াহিয়া ও ‘জি’ গ্রুপ থেকে মো. রেজাউল করিম।
এদিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবী প্যানেলের সাধারণ সদস্য প্রার্থীরা হলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ফজলুর রহমান, তৈমূর আলম খন্দকার, বোরহানউদ্দিন, হেলালউদ্দিন মোল্লা, মো. আব্বাস উদ্দিন ও আসিফা আশরাফী পাপিয়া।
আর অঞ্চলভিত্তিক সদস্য পদে ‘এ’ গ্রুপ থেকে মো. মহসীন মিয়া, ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাধন কুমার গোস্বামী, ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেখ মোখলেসুর রহমান, ‘ডি’ গ্রুপ থেকে মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, ‘ই’ গ্রুপ থেকে এস আর ফারুক ও ‘এফ’ গ্রুপ থেকে মো. ইসহাককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৪ মে (সোমবার) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র, দেশের জেলা সদরের সকল দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গনে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র এবং বাজিতপুরসহ দেশের ১২ উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি আদালত অঙ্গণের ভোটকেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আইনজীবীদের সনদ প্রদানের ক্ষমতাসহ পেশাগত বিষয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বার কাউন্সিল ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রের এটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকী ১৪ জন আইনজীবীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
১৪ জনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৪ জন সদস্যের মধ্যে সারা দেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে ৭ জন এবং দেশের ৭টি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে ৭ জন নির্বাচিত হবেন।
৭টি অঞ্চল হলো-
১. সাবেক বৃহত্তর ঢাকা জেলার সকল আইনজীবী সমিতি
২. বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতি
৩. বৃহত্তর চট্রগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতি
৪. বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি
৫. বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি
৬. বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতি এবং
৭. বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতি।
এছাড়া, নির্বাচন সংক্রান্ত আপত্তি শুনানির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হলেন- বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। বাকি দু’জন মেম্বার হলেন- বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মোঃ ওজিউল্ল্যাহ।
বর্তমানে বার কাউন্সিলের ১৪ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরকার সমর্থক আইনজীবীরা, এই সংখ্যা ১০। তাদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজন এবারো মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমান কমিটিতে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীর সংখ্যা চার।