বিশ্বে সম্মানজনক পেশাগুলোর মধ্যে অন্যতম আইন পেশা। বাংলাদেশে যারা এই পেশায় নিয়োজিত তাদের বলা হয় এ্যাডভোকেট বা উকিল। আমেরিকায় আইনজীবীকে বলা হয় অ্যাটর্নি। তেমনি অস্ট্রেলিয়ায় আইনজীবীকে বলা হয় ব্যারিস্টার। এভাবে বিভিন্ন দেশে আইনজীবীকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যারা এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য ব্যারিস্টারি কোর্সটি হতে পারে অন্যতম সহায়ক। ব্যারিস্টার অ্যাট ল’র সংক্ষিপ্ত রূপ হলো বার অ্যাট ল’। ব্যারিস্টার হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ৯ মাসের বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স (বিপিটিসি) করতে হয়। আসুন জেনে নেয়া যাক এই বিষয়ে কিছু তথ্য-
আবেদনের যোগ্যতা : ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধিভুক্ত কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ যদি এলএলবি অনার্স পাস করে তবে তাকে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে হলে আবার নতুন করে কোন ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে এলএলবি বা এলএলএম পাস করতে হবে।
দেশে বসেই ব্যারিস্টারি : আপনি ব্যারিস্টারি পড়তে চান। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশেই ভূঁইয়া একাডেমির সহযোগিতায় বার অ্যাট ল’ পড়ার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে এইচএসসি/ব্যাচেলরস ডিগ্রী/মাস্টার্স ডিগ্রী বা সমমানের শিক্ষার্থীরা ভূঁইয়া একাডেমিতে (ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত) ২/৩/৪ বছর মেয়াদি এলএলবি অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। শিক্ষার্থীরা University of London এর অন্যান্য Institutions এর সঙ্গে সারা বিশ্বে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ও একই সময়ে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। পরীক্ষা নেয়া হয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডেই এসব উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়। সার্টিফিকেটে লেখা থাকে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন। এভাবে দেশে বসেই ইংল্যান্ডের ডিগ্রী পেতে পারেন। ভর্তির ক্ষেত্রে অবশ্য নির্দিষ্ট কোন বয়সসীমা নেই।
এলএলবির পর : এলএলবি করার পর ইংল্যান্ডে সরাসরি বার ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এর অধীনে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে আইনী পেশার এই ডিগ্রী নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সের জন্য ইংল্যান্ডে যেতেই হবে।
কোথায় পড়বেন : ইংল্যান্ডের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স করায়। তাদের যে কোন একটি হতে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ইংল্যান্ডের চারটি ইনস-এর যে কোন একটি থেকে বার এ্যাট ল’ এর সনদ প্রদান করে। অর্থাৎ লিন্কনস্ ইন, গ্রেইস ইন, ইনার টেম্পল ও মিডল টেম্পল এই চারটি ইন’স-এর মধ্যে যে কোন একটি আপনাকে বেছে নিতে হবে।
সনদ ইন থেকে দেয়া হলেও কোন একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করতে হয়। ইন’স অব কোর্ট, স্কুল অব ল, কলেজ অব ল, বিপিপি ল’ স্কুল, নটিংহ্যাম, নর্দামব্রিয়া, ব্রিস্টল, কার্ডিফ, ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন এর মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বার এ্যাট ল করা যায়। এর যে কোন একটিতে পড়তে পারেন। সাধারণত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বার এ্যাট ল কোর্সে ভর্তি করা হয়।
খরচ : ব্যারিস্টারি দেশে বসে অল্প খরচে করতে পারেন। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রীটা যদি ঘরে বসে নিতে চান, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি বাবদ ৬.৫০ থেকে ৯ লাখ টাকা লাগবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে পড়তে চাইলে শুধু টিউশন ফি বাবদ লাগবে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। বার ভোকেশনাল কোর্সের বর্তমান টিউশন ফি ১২ থেকে ১৮ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশী টাকায় এ ফি ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। বার অ্যাট ল’ কোর্সটির মেয়াদ ৯ মাস।
অন্যান্য তথ্য : ভূঁইয়া একাডেমিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ পড়ারও সুযোগ রয়েছে।
সুযোগ-সুবিধা : প্রায় ৬ (ছয়) হাজার বই সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, ওয়াই ফাই সুবিধা, কম্পিউটার ল্যাব, ক্যাফেটেরিয়া, ইংরেজী ভাষার জন্য বিশেষ ক্লাস, সেমিনার আয়োজন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিকল্প ক্লাসের ব্যবস্থা, মাল্টিমিডিয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি এবং সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত।