আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে শনিবার (২৬ মে) রাতে ১১ জেলায় র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১১ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফ পৌরসভার এক কাউন্সিলর রয়েছে। পুলিশের ভাষ্য মতে, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরে ‘গোলাগুলিতে’ দুই এবং পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, খুলনা, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও নোয়াখালীতে এক করে আট জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফ থানার নোয়াখালীপাড়া এলাকায় র্যাব ৭- এর একটি দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভুক্ত শীর্ষ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও টেকনাফ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হয়েছে।
শনিবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
র্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-২) মেজর রুহুল আমিন বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২ টার দিকে টেকনাফের নোয়াখালীপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে র্যাবের গুলি বিনিময় হয়। পরে সেখান থেকে তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
তিনি জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল একরামুলের অবস্থান জানতে পারে। অভিযান শুরু করলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে একদল মাদক ব্যবসায়ী র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে র্যাব ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়রা টেকনাফ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হক বলে শনাক্ত করেন। মৃতদেহটি টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খানও গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটার গান, ছয় রাউন্ড গুলি ও গুলির পাঁচটি খালি খোসা উদ্ধার করেছে র্যাব। একরামুলের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রায়হান উদ্দিন (২৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাত পৌনে ১টার দিকে উপজেলার নড়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। একই অভিযানে পুলিশ আরও তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান।
নিহত রায়হানের গ্রামের বাড়ি একই উপজেলা গোলাবাড়িয়া এলাকায়।
মোজ্জামেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টহল টিম নড়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযানে যায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রায়হানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ হাজার পিস ইয়াবা ও দুটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, অভিযানে আমাদের তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
চাঁদপুর
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সেলিম (৩৭) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। মতলব পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ঢাকিরগাঁও এলাকায় শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সেলিমের বাড়ি উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের উপদী গ্রামে।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত পৌনে ৩টার দিকে মতলব দক্ষিণ থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল চাঁদপুরের মতলব সড়কের হাজীর ডোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত মাদক মামলার আসামি সেলিমকে আটক করে। এসময় সেলিমের সহযোগীরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওপর গুলি ও হামলা চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে মতলব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কতুবউদ্দিন জানায়, এই ঘটনায় ৪ পুলিশ আহত হয়েছেন। এছাড়া ৪ রাউন্ড গুলি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ, ১১০ পিস ইয়াবা, দু’টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
নোয়াখালী
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. হাছান প্রকাশ ওরফে ইয়াবা হাছান (৩৫) নিহত হয়েছে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র,গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বগাদিয়া ইজতেমা মাঠে এই ঘটনা ঘটে। হাছানের বাড়ি সোনাইমুড়ী পৌরসভার বগাদিয়া এলাকায়।
এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন, পুলিশ কনেস্টবল সোহাগ, জহির মজুমদার ও গোলাম সামদানি।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা হাছানকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাতে তাকে নিয়ে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের জন্য বগাদিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা হাছানের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। এতে ইয়াবা হাছান গুলিবিদ্ধ ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাছানকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৭ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা, তিনটি লম্বা ছেনি, একটি দা ও ১২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, সে একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার মৃতদেহ সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। হাছানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তিনটিসহ মোট ২১টি মামলা রয়েছে।
খুলনা
যশোরের মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম (৪০) খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর সিদ্দিকপাশা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আনিসুর রহমান বলেন, কালামের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। অভিযানকালে ১০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, কালাম মাদকের পাইকারি বিক্রেতা ছিলেন। তার বাড়ি যশোরের অভয়নগর থানার ইছামতি গ্রামে।
তিনি আরও জানান,কালাম বারাকপুর গ্রামে তার ভগ্নিপতি আজাদের বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিল। ১০০ পিস ইয়াবাসহ শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত পৌনে ৩টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নদীর খেয়াঘাট সংলগ্ন শ্মশান ঘাটে মাদক উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে কালাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি শটগান, চারটি ককটেল, এক রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও নম্বর প্লেটবিহীন একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হালিম মণ্ডল (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহরের হাউজিং ‘ডি’ ব্লক মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
ওসি জানান, মাদক দ্রব্য বেচাকেনার উদ্দেশ্যে একদল মাদক ব্যবসায়ী শহরের হাউজিং ‘ডি’ ব্লক মাঠে অবস্থান করছে, এমন গোপন সংবাদ পেয়ে মডেল থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় চার পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত হালিম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটার গান, একটি পাইপ গান, তিন রাউন্ড গুলি ও ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।’
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের বড়দাহ জামতলা রাস্তার পাশে অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ীর লাশটি পড়েছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।
তিনি জানান, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশ সেখানে পৌঁছে দেখে, রাস্তার পাশে অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ পড়ে আছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ১০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে।’
নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম-ঠিকানা এখনও পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ঝিনাইদহে এ নিয়ে মোট তিনজন নিহত হয়েছে।
মেহেরপুর
মেহেরপুরের গাংনীতে দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলিতে হাফিজুল ইসলাম হাফি (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাথানগাড়ী মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। তার বাড়ি গাংনী ডিগ্রি কলেজ পাড়ায়।
গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার জানান, দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর গোলাগুলি চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বাথানগাড়ী মাঠে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় হাফিকে গাংনী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এম কে রেজা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ানশুটার গান ও ১১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। হাফির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মাদকের মামলা রয়েছে। সে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ব্যাপকভাবে পরিচিত। সে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে এনে বিক্রি করতো।
বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মিতুন বিশ্বাস (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে চিতলমারী উপজেলার চিংগুরি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মিতুনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে জানিয়েছে পুলিশ।
মিতুনের বাড়ি চিতলমারী উপজেলার চিংগুরি গ্রামে।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকূল বিশ্বাস জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে মাদক সম্রাট মিতুনকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের একটি দল মাদক উদ্ধারের জন্য তার বাড়ির দিকে রওনা হয়। এসময় লুৎফর মেলেটারীর বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছুলে তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের হাত থেকে মিতুন পালিয়ে যায়। গুলিবিনিময়ে এক পর্যায়ে মাদক সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে মিতুনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ, একটি শাটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ছুরি, দুই কেজি গাঁজা ও ১০০ ইয়াবা উদ্ধার করে। মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে বলে ওসি জানান।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মহানগরীর কেওয়াটখালি মরাখোলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২৫/২৬ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি— নিহত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী।
শনিবার রাত দেড়টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ওই ব্যক্তি নিহত হয়। এসময় পুলিশের কনস্টেবল হুমায়ুন ও আমির হামজা আহত হয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন, ১০০ পিস ইয়াবা, গুলির চারটি খোসা, দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি আশিকুর রহমান বলেন, ‘শনিবার রাত দেড়টার দিকে মহানগরীর কেওয়াটখালির মরাখোলা এলাকায় কয়েকজন মাদক বিক্রেতা মাদক ভাগাভাগি করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ যৌথভাবে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যরা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পরে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ’
ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রফিকুল ইসলাম তালেবান (৫৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জেলা পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ নিশ্চিত করেন।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার রাতে রাণীংশকৈল উপজেলার ভৌরনিয়া মীরডাঙ্গী এলাকায় পুলিশ মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম তালেবানের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রফিকুল নিহত হয়। রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান জানান, পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানে ওই এলাকায় গেলে একদল মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের ওপরে হামলা চালায়। এ সময় বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল নিহত হয়।
ওসি বলেন, ‘এই মাদক ব্যবসায়ীর নামে মাদকদ্রব্য আইনে ২০টির ওপরে মামলা রয়েছে।’