রাজধানীর মহাখালীতে ৬ নম্বর বাস (মতিঝিল-বনানী রুট) চাপায় আহত নুরুল আমিন চৌধুরীকে কেন দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দায় ও ক্ষতিপূরণ নিরুপণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে সড়ক ও জনপথ সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার (১০ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
অ্যামনেস্টি বেঙ্গলের পক্ষে প্রধান নির্বাহী অধ্যক্ষ ড. রেজিনা বানু এ রিট দায়ের করেন। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন।
তিনি জানান, ঘটনার পর একটি জাতীয় দৈনিকে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রোববার আদালত রুল জারি করেছেন।
এছাড়া ক্ষতি এবং দায় নিরুপণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সড়ক ও জনপথ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ড. দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন।
রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন- স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক ও জনপথ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান, পুলিশের গুলশান জোনের উপ কমিশনার, ট্রাফিক পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার ও বনানী মডেল থানার ওসি, ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মনসুর ও ৬ নম্বর বাসের মালিক (ঢাকা মেট্রো-ব-১১৩০৮৩) মো. নাসির।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাসের চাপায় থেঁতলে যাওয়া পা সংক্রমিত হয়ে এখন জীবনশঙ্কায় রয়েছেন নুরুল আমিন (৫৬)। রাজধানীর মহাখালীতে দুই বাসের প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েন তিনি। একটি বাস তার পায়ের ওপর রেখেই পালিয়ে যান চালক। উপস্থিত লোকজন বাস কাত করে তার পা বের করে নিয়ে আসেন। ১৭ মে খিলগাঁওয়ের প্রকাশনা ব্যবসায়ী নুরুল আমিনের ডান পা ছয় নম্বর পথের একটি বাসের চাপায় থেঁতলে হাঁটুর নিচ থেকে মাংসপেশি খসে পড়ে গেছে। ওইদিন তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গুহাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছিল। নুরুল আমিনের জামাতা নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তার ডান পায়ের সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পায়ে পোকা ধরেছে। তাকে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখন সেখানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন। তার ডান পা কেটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে এখনই সেই অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। সংক্রমণ থেকে তার শরীরে আরও নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে’।
‘নুরুলের ওপর নির্ভরশীল তার দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী। তিনি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে অকূলপাথারে পড়েছে পরিবারটি’।
‘বনানী থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে আহত ব্যক্তির পরিবার এ বিষয়ে কোনো মামলা করেনি।’
‘আহত নুরুল আমিনের জামাতা নুরুল ইসলাম বলেন, নুরুল আমিনকে বাঁচাতে হাসপাতাল, চিকিৎসকদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করেই তারা কূল পাচ্ছেন না। এ কারণে থানায় যেতে পারেননি। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই কর্মকর্তা বাস মালিকের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।’