যৌতুকের অভিযোগে মিথ্যা মামলা করলে ৫ বছরের জেল ও জরিমানার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপিত হয়েছে। এই বিল অনুযায়ী বিয়ের সময় বা তার আগে ও পরে যৌতুক দেয়া নিরোধ-সংক্রান্ত আইন রহিত করে নতুন করে এই বিলটি আনা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৫ জুন) ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮’ নামে বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন মহিলা শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম। তিনি বিলটি গুরুত্ব অনুযায়ী আরো যাচাই-বাছাই করার জন্য জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলটি অনুযায়ী- ‘যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের জন্য এই আইনের অধীনে মামলা বা অভিযোগ করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নেই জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তা হলে তিনি অনধিক ৫ বছর দারাদণ্ড ও অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দাণ্ডিত হবেন।’
এই আইন অনুযায়ী যৌতুক লেনদেন করলে কমপক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড হবে। আর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
তবে মুসলিম ব্যক্তি আইন প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে দেনমোহর বা মোহরানা অথবা বিয়ের সময় বিয়ের পক্ষগণের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব বা শুভানুকাঙ্ক্ষীর দেয়া কোনো পক্ষকে উপহার সামগ্রী এর অর্ন্তভুক্ত হবে না।
মূল বিলটি হবে বাংলায়। তবে এর একটি ইংরেজি অনুবাদ থাকবে। যদি দুই ভাষার মধ্যে কোনো বিরোধ থাকে তাহলে বাংলা আইন অনুযায়ী বিচার হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণে বলা হয়েছে, যৌতুক প্রথা দূর করার জন্য ১৯৮০ সালে প্রণীত হয়,`The dowry Prohibition Act, 1980। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন সুসংহত করার ক্ষেত্রে সরকার ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭’সহ নারীবান্ধব বিভিন্ন আইন করেছে। আগে যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলা করলে কোনো শাস্তি ছিল না। এই আইনের অধীন সংঘঠিত অপরাধ আমলযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপসযোগ্য।