রাজধানীর মিরপুরের বিইউবিটি’র শিক্ষার্থী সৈয়দ মো. মাসুদ রানাকে (২৩) চাপা দেওয়া দিশারী পরিবহনের চালক মো. হানিফ ওরফে মুন্নাকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোররাতে লক্ষ্মীপুর সদর এলাকার মনু মিয়া মোল্লাবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
লক্ষ্মীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় ডিএমপির দারুস সালাম জোনের সিনিয়র এসি জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে শাহআলী থানা পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই চালক গ্রেফতার হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
মাসুদ রানা মিরপুর চিড়িয়াখানা সড়কে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএর ৩০তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় মাসুদ রানা দক্ষিণ বিসিলের ১১ নম্বর সড়কের নিজেদের বাড়িতে বাবা-মা ও ভাইবোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি।
এসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই বাসচালক ঢাকা থেকে পালিয়ে লক্ষীপুরে চলে যায়। ওখানেই তার গ্রামের বাড়ি। প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য কৌশলে চালক হানিফের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে লক্ষ্মীপুরের সদর থানা-পুলিশের সহযোগিতায় বুধবার ভোরে হানিফের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বাড়ি গেলেও তিনি নিজের বাড়িতে থাকেননি। পাশের একটি বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ঢাকায় আনা হয়েছে। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে হানিফকে আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরো বলেন, হানিফ চালাকি করে নিজের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি। তার স্বজনদের ফোন বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে হানিফ দোষ স্বীকার করে বলেছেন, রিকশায় ধাক্কা লাগার পর সে বুঝতে পারেনি, তার গাড়ির নিচে কেউ পড়েছে। তাই গাড়ি চালিয়ে গেছে।
২ জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে চিড়িয়াখানা সড়কের ঈদগাহ মাঠ মোড়ে দিশারী পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে তাকে ধাক্কা দেয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ মাসুদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাসটি জব্দ করলেও চালক হানিফ পালিয়ে যান। এ ঘটনায় মাসুদের বাবা বাদি হয়ে মামলা করেন। ঘটনার পর ওই দিন দুপুরে বিইউবিটির শিক্ষার্থীরা সনি সিনেমা হলের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু প্রথমদিন চালক গ্রেফতার না হওয়ায় দ্বিতীয়দিন মঙ্গলবার আবারো সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।