অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নিয়ে প্রশ্ন করেছেন আদালত। এ সময় আদালত তার আইনজীবীর কাছে জানতে চান মামলা ছাড়া আগাম জামিন হয়েছে এমন নজির আছে কি না?
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের আগাম জামিন নিয়ে জারি করা রুল খারিজের ওপর রায় না দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) এমন প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি ড. কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৩ জুলাই দিন ঠিক করেছেন আদালত।
আদালতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে জানান, এর আগে গত ১০ জুলাই এ বিষয়ে শুনানি হয়েছিল। ওই দিন শুনানি করে পরর্বতী শুনানি ও রায়ের জন্য ১৭ জুলাই দিন ঠিক করেন আদালত। সেদিন (১৭ জুলাই) সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ (১৯ জুলাই) রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন। আজ নির্ধারিত দিনে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আইনজীবীকে মামলা ছাড়া জামিনের কোনো সিদ্ধান্ত হয় এমন নজির উপস্থাপন করতে বলেন। তিনি আজ আবারও সময় প্রার্থনা করেন। তাই মামলায় ২৩ জুলাই পরর্বতী তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, কোর্ট বিচারপতির আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের কাছে জানতে চান মামলা ছাড়া আগাম জামিন হয়েছে এমন নজীর আছে কি না? তিনি আদালতে কোনো ডিসিশন জানাতে পারেননি, পরে এই বিষয়ে তিনি সময় চান। কোর্টও কিছু ডিসিশন দিয়ে দেখে আসতে বলেন।
পরে আদালত আইনজীবীর সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২৩ জুলাই সোমবার রায়ের জন্য ধার্য করেন। ওই দিন রায়ের জন্য বিষয়টি কজলিস্টের প্রথমে থাকবে বলেও জানান তিনি।
খুরশীদ আলম খান জানান, ওনার (বিচারপতি জয়নুল আবেদীন) বিরুদ্ধে রেগুলার কোনো মামলা নেই। মামলা না থাকলে জামিন কীভাবে হয়?
জানা যায়, ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে সাবেক এই বিচারপতিকে নোটিশ দেয় দুদক। পরে দুদকের দেয়া নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি একই সালের ২৫ জুলাই হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছিলেন। যে রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়ে যায়।
পরে ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে আরও একটি নোটিশ দেয় দুদক। পরে ওই বছরের ৩ নভেম্বর তিনি এ বিষয়ে দুদকে তথ্য জমা দেন। দীর্ঘদিন পরে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার কাছে সম্পদের ব্যাপারে ব্যাখা চায় দুদক। পরে তিনি ব্যাখ্যা দেন। এরপর ওই বছরের জুনে একটি পত্রিকায় ওই বিচারপতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতার ও হয়রানির আশঙ্কা থেকে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন এবং কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন।
জারি করা ওই রুলের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের জারি করা রুল দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলেন। সে অনুসারে রুল শুনানি শুরু হয়।