ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবী সমর চৌধুরীকে আটকের ঘটনায় বোয়ালখালী থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক আরিফুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) তাকে বোয়ালখালী থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সমর চৌধুরীর ঘটনাটি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ এসেছে। সেকারনে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
সম্প্রতি চট্টগ্রাম রেঞ্জে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক এক মতবিনিময় সভায় সমর চৌধুরীর বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান। এ সর্ম্পকে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘সমর চৌধুরী মুক্তি পাওয়ার পর ডিআইজি স্যার ও আমার সাথে দেখা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করতে তিন সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (দক্ষিণ) প্রধান করে এই কমিটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) ও সহকারী পুলিশ সুপারকে (বিশেষ শাখা) কমিটির সদস্য করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
গত ২৭ মে রাতে বোয়ালখালী থানা পুলিশ আইনজীবী সমর চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ। তবে সমর চৌধুরীর পরিবার দাবি করেছে এক প্রতিবেশীর প্ররোচনায় পুলিশ তাকে ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়েছে।
সমর চৌধুরীর মেয়ে অলকানন্দ ওই সময়ে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ২৭ মে আদালতের কাজ শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসায় আসার পথে নগরীর জহুর হর্কাস মার্কেটের সামনে সাদা পোশাকদারী কিছু পুলিশ সদস্য বাবাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে তুলে পুলিশ সদস্যরা কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে তাকে বোয়ালখালীর চরনদ্বীপ খালের পাশে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে পুলিশ সদস্যদের কথোপকথন থেকে তিনি বুঝতে পারেন তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওখানে যাওয়া মাত্র পুলিশের কাছে দুই-তিনটি ফোন আসে। এরপর পুলিশ ওখান থেকে মাইক্রোবাস ঘুরিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ঘরে আগে থেকে রেখে দেওয়া অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।’
অলকানন্দ চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, জায়গা-জমি সংক্রান্ত একটি মামলায় বাবা আমাদের এলাকার প্রতিবেশী স্বপন দাশকে সহযোগিতা করায় তার ভাতিজা সঞ্জয় দাশ পুলিশকে দিয়ে তার বাবাকে ফাঁসিয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ তার নামে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। গত ২৪ জুন সমর চৌধুরী মাদকের মামলায় জামিন পান। এরপর গত ১০ জুলাই অস্ত্র মামলায় জামিন পাওয়ার পর ১২ জুলাই চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান তিনি।