পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেলুচিস্থানের কোয়েটার ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় একটি কেন্দ্রের বাইরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছে বলে ডনের খবরে বলা হয়।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। ঘটনার পর কেন্দ্রটিতে কয়েক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
পুলিশ জানায়, আহত হয়েছে ২০ জনের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে আটজনের অবস্থা গুরুতর।
এরই মধ্যে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কোয়েটা পুলিশের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, তামির-ই-নাউ মডেল স্কুল কেন্দ্রে ঢুকতে চাইছিলেন সেই আত্মঘাতী ব্যক্তি। কিন্তু পুলিশ বাধা দিলে সেখানেই তিনি নিজেকে উড়িয়ে দেন। প্রাথমিক খবরে বলা হয়েছিল, টহল পুলিশের একটি ভ্যানকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে।
ডন নিউজটিভি জানিয়েছে, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় কেন্দ্রের একজন কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এর আগে নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আত্মঘাতী হামলায় তিনজন প্রার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাণ গেছে তাঁদের দুই শতাধিক নেতা ও কর্মী-সমর্থকের। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের দিন নতুন করে রক্ত ঝরার শঙ্কা ভোটারদের মধ্যে ছিলই।
কোয়েটার যে এলাকায় বিস্ফোরণটি হয়েছে, সেটি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬০তম আসন। এই এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়। গত ১৫ বছরে এই এলাকায় বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অনেক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার বাইরেও দিনের শুরুর দিকে খোজদার জেলায় কোস্ক নামের গ্রামে একটি ভোটকেন্দ্রে হাতবোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন পুলিশ সদস্য নিহত ও তিনজন আহত হন। এ ছাড়া বেলুচিস্তানের নাসিরাবাদে রোপাশাখ আকবর ভোটকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে দুজন আহত হয়েছে বলে ডন জানিয়েছে।
এবারের নির্বাচন দেশটির ১১তম সাধারণ নির্বাচন। প্রায় ১০ কোটি ৬০ লাখ ভোটার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ২৭২ জন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবেন। ৫ কোটি ৯০ লাখ পুরুষ ও ৪ কোটি ৭০ লাখ নারী ভোটার ভোট দিচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ভোট নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের পিএমএল-এন, ভুট্টো পরিবারের ঐতিহ্যবাহী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মধ্যে।
ধারণা করা হচ্ছে, নওয়াজের দলের সঙ্গে ইমরানের দলের মূল লড়াইটা হবে। তবে ছেড়ে কথা বলবে না পিপিপি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১৭২ আসন কোনো দল নিশ্চিত করতে না পারলে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর নাতি ও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন।