ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট। নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকায় ‘বাথরুম’ পেয়েছে বলে থেমে থাকা বাস থেকে নেমেছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান (পায়েল)। এর মধ্যেই যানজট কিছুটা ছাড়লে বাস এগোতে থাকে। সাইদুর দৌড়ে এসে বাসে উঠতে গিয়ে নাকেমুখে আঘাত পান। রক্ত বের হতে থাকে। আহত যাত্রীকে চিকিৎসা দেওয়ার বদলে বাসটির চালক, সুপারভাইজার ও চালকের সহকারী মিলে একটি সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন। দুর্ঘটনার দায় এড়াতে বাসকর্মীরা এমন কাজ করেন বলে বাসটির সুপারভাইজার মো. জনি গতকাল বুধবার (২৫ জুলাই) মুন্সিগঞ্জের আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
গত শনিবার রাতে হানিফ এন্টারপ্রাইজের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার পথে নিখোঁজ হয়েছিলেন সাইদুর। সোমবার গজারিয়ার ভবের চরে নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ বাসচালক জালাল, সুপারভাইজার জনি ও চালকের সহকারী ফয়সালকে আটক করে।
গজারিয়া থানার ওসি হারুন-উর-রশীদ বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জনি ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে মুন্সিগঞ্জের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অন্য দুজন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
আদালতের পুলিশ পরিদর্শক হেদায়তুল ইসলাম বলেন, মুন্সিগঞ্জের আমলি আদালতে জবানবন্দিতে জনি বলেন, সাইদুর বাসে উঠতে গিয়ে দরজার সঙ্গে জোরে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। বাসচালক, চালকের সহকারী ও সুপারভাইজার ধারণা করেন, সাইদুর মারা গেছেন। পরে চালকের সহকারী ও সুপারভাইজার সাইদুরকে ভাটের চর সেতুর নিচে ফুলদী নদীতে ফেলে ঢাকায় চলে যান।
সাইদুরের বাড়ি চট্টগ্রামের হালিশহরে। শনিবার রাতে আরও দুই বন্ধুসহ ঢাকার উদ্দেশে বাসে উঠেছিলেন তিনি। বাস থেকে নামার সময় তাঁর মুঠোফোনটিও আসনে ছিল। তখন তাঁর বন্ধুরা ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে বন্ধুরা বাসকর্মীদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলেন, সাইদুর রাস্তায় নেমেছেন, পরের গাড়িতে আসবেন।