নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামালার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে আইন, বিচার, মানবাধিকার ও সংবিধানবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম।
আজ সোমবার (৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান জাবেদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি এম বদি-উজ-জামান, আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মিশন, আজিজুল ইসলাম পান্নু ও বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কবির হোসেন ও মো. ইয়াসিন।
এ ছাড়া সহ-সভাপতি হিরা তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অর্ধশতাধিক সদস্য।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সাংবাদিকরা কারও প্রতিপক্ষ নয়। তারপরও বারবার পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে কেন হামলার শিকার হতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ সময় তারা হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় গতকাল (৫ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা । এ সময় তাদের হাতে ছিল লাঠি-রড-রামদা-চ্যালা কাঠ। পরিচয় লুকাতে মাথায় ছিল হেলমেট। অনেকের মুখ কাপড় বাঁধা ছিল।
শিক্ষার্থী ছাড়াও কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরও খুঁজে খুঁজে নির্মমভাবে পেটান তারা। এমনকি নারী চিকিৎসক, বৃদ্ধ পথচারীও রেহাই পাননি।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসচাপায় নিহত হন মিম ও করিম নামে দুই শিক্ষার্থী। ওই দুর্ঘটনায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী আহতও হন। এ ঘটনায় দিয়ার বাবা ওই দিনই ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে ঢাকা শহরের সব রুটে কয়েকদিন বাস চলাচল বন্ধ রেখেছিলেন পরিবহন মালিকরা। সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে শনিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্ররূপী বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
জিগাতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে গত দু’দিন। এসব ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বেশ ক’জন সাংবাদিক।