প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ড. ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক। দেশে আপিল বিভাগের প্রথম এ আইনজীবী নারী আইনজীবীদের জন্যও মাইলস্টোন। তিনি একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন উঁচু মানের আইনজীবী।
নারীর অধিকার আদায়ের স্বীকৃতি হিসেবে ‘ডক্টর অব লজ’ উপাধিতে ভূষিত হওয়ায় দেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার ও আপিল বিভাগের আইনজীবী ড. ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া সম্মানে গুলশানের একটি হোটেলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, রাবেয়া ভূঁইয়া সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী ছাড়াও শিক্ষা, সামাজিক ও নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তিনি এখন ব্যক্তি হিসবে নয়, প্রতিষ্ঠান হিসেবেই বেশি পরিচিত।
সংবর্ধিত ড. ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া বলেন, নারীর অধিকার নিয়ে বিভিন্ন অবদানের কারণে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন তাঁকে যে সম্মান দিয়েছে, এ জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
ব্যারিস্টার রাবেয়া বলেন, যেদিন নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্যে শূন্যের কোঠায় চলে আসবে, সেদিনইতাঁ এই অর্জন সার্থক হবে।
চলতি বছরের ৬ মার্চ ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন তাদের ১৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়াকে ‘ডক্টর অব লজ’ উপাধিতে ভূষিত করে। দেশ-বিদেশে নারীদের শিক্ষাক্ষেত্রে অপরিসীম অবদানস্বরূপ তাঁকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তিনি এশিয়ার দ্বিতীয় নারী এবং দেশে প্রথম হিসেবে এ সম্মান অর্জন করেন।
ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যারিস্টার ও আপিল বিভাগের প্রথম নারী আইনজীবী। তিনি ১৯৭৩ সালে ব্রিটেনের লিংকন ইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি প্রথম ১৯৮৯ সালে ব্রিটিশ সিলেবাসের আদলে এলএলবি কোর্সের (অনার্স) জন্য ভূঁইয়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। এ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বার-অ্যাট-ল অর্জন করে আইন অঙ্গনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন।
ব্যারিস্টার রাবেয়া ভূঁইয়া ১৯৮৫-৮৭ সাল পর্যন্ত সমাজকল্যাণ ও মহিলাবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অন্যতম আইনজীবী।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের পরিচালক সাইমন আস্কে।