খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

খালেদার জামিন বাতিল কেন নয়, আইনজীবীদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না- জানতে চেয়ে তার আইনজীবীদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে জামিনে থাকা আসামি মনিরুল ইসলাম খানের জামিন বাতিল করা হয়েছে।

আজ রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে আদালতের প্রতি অনাস্থা নিয়ে মামলার আসামি ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আগামী ৭ অক্টোবর ‘ডিফেন্ডিং অ্যান্ড রিপ্রেজেন্টেটিভ’ বিষয়ে দুইপক্ষের আইনজীবীকে আইনি বক্তব্য তুলে ধরতে এবং পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতের প্রতি দুই আসামির অনাস্থা বিষয়ে রায়ের জন্য রোববার দিন ধার্য করা হয়।

শুনানিতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার এবং আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।

এদিকে আসামি মনিরুল ইসলাম স্থায়ী জামিনে ছিলেন। তবে রোববার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে থাকা মুন্নাকে আগেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আসামি ৪ জন। তারা হলেন- কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এর মধ্যে হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।

অন্যান্যদিনের মতো খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই রোববার বেলা ১১টা ৮ মিনিটে আদালতে কার্যক্রম শুরু হয়। চলে দুপুর একটা পর্যন্ত।

মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল গত ১২ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে খালেদার কাস্টডি আদালতে পাঠানো হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে ‘অনিচ্ছুক’। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বরও খালেদার ‘অনিচ্ছা’র কথা জানিয়ে একই কাস্টডি পাঠানো হয় আদালতে।

সেদিন দুদকের আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে কি-না, এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

পরে ওইদিন আদালত বলেন, খালেদা জিয়া বিচার পর্যায়ে ৪০ বার, আত্মপক্ষ সমর্থন পর্যায়ে ৩২ বার (আদালতে উপস্থিত হতে) সময় নিয়েছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অন্য একটি মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর এতদিন পর্যন্ত এ মামলার যুক্তিতর্ক করা শুরু করা সম্ভব হয়নি।

কোনো আসামি যদি দিনের পরদিন (আদালতে) না আসেন, তবে তো মামলার বিচার প্রক্রিয়া থেমে থাকতে পারে না। তাই খালেদা জিয়াকে ছাড়াই অন্য আসামিদের পক্ষে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুরুর জন্য আইনজীবীদের নির্দেশ দেন আদালত।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার পর থেকে পুরান কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।

এরপর থেকে মামলার শুনানির দফায় দফায় তারিখ পড়লেও ‘অসুস্থ থাকায়’ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজির হতে পারেননি তিনি।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেন-দেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক।