সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য ও রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় পুলিশের দায়ের করা নাশকতার মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ সাত নেতা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। অন্য দুজন হলেন ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
সকাল ১০টায় বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও কাশেফা হোসেনের আদালতে এই জামিন আবেদন করা হয়। পরে বেলা সোয়া ১১টায় জামিনের শুনানি হয়। আদালতে বিএনপি নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। অপরপক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে দ্বৈত বেঞ্চ বিএনপি নেতাদের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন।
পরে বিএনপি নেতাদের আইনজীবীরা জানান, যে পর্যন্ত পুলিশ মামলার অভিযোগপত্র না দিচ্ছে, তত দিন বিএনপির এই সাত নেতা আগাম জামিনে থাকবেন। এ মামলায় এরই মধ্যে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আগাম জামিন নিয়েছেন। আরো যাঁরা আছেন, তাঁরা পর্যায়ক্রমে আগাম জামিন চাইবেন।
গত ১ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ।
মামলায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় পুলিশ বলছে, বিএনপি কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে। সেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেন।
মামলায় বলা হয়, বিএনপির এসব নেতার এমন বক্তব্যের পর হাতিরঝিল থানার মগবাজার রেলগেট এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং জামায়াত, ছাত্রশিবিরের ৭০ থেকে ৮০ জন নেতাকর্মী জড়ো হন। তাঁরা রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিশ জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ না করতে অনুরোধ করে। কিন্তু পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে তাঁরা পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইট ছুড়তে শুরু করেন। সেখানে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং একটি বাস ভাঙচুর করেন। প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাঁরা লাঠি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মারধর শুরু করেন, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান।
মামলায় আরো বলা হয়, ভাঙচুর করা গাড়িগুলো আত্মরক্ষার্থে দ্রুত চলে যাওয়ায় গাড়ির নম্বর সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ।