মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী প্রতারক চক্রের গ্রেফতার পাঁচজনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। সদ্য কার্যকর হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এটিই প্রথম মামলা।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার কালাম গাজীর ছেলে কাউসার গাজী (১৯), চাঁদপুর মতলবের জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল মিয়া (২১), মাদারীপুরের কালকিনির হাসানুর রশীদের ছেলে তারিকুল ইসলাম শোভন (১৯), নওগাঁ পত্নীতলার আলমের ছেলে রুবাইয়াত তানভির (আদিত্য), টাঙ্গাইলের কালিহাতীর আনসার আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান ইমন।
তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বুধবার (১০ অক্টোবর) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ধারা ২৩(২), ২৪(২) ও ২৬(২) সহ পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ৪/১৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্ন ফাঁসকারী প্রতারণা চক্রের মাস্টার মাইন কাউসার গাজীকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, বর্তমানে আমরা প্রশ্ন ফাঁস করতে পারছি না তাই নিজেদের মতো করে প্রশ্ন তৈরি করি। বিভিন্ন ফেক ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করি।’
মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, মাস্টারমাইন্ড কাউসার গাজীকে এ কাজে সহযোগিতা করতো তার বন্ধু সোহেল মিয়া। সে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতো।
তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে আরও জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজ করে আসছে। কিন্তু এবার প্রশাসনের তৎপরতার কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি। কিন্তু ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে ১০টি ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মেডিক্যালের প্রশ্ন পাওয়া যাচ্ছে বলে প্রচারণা চালায়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে মোল্লা নজরুল জানান, তারা বিভিন্ন সাজেশন বই, বিগত বছরগুলোর প্রশ্নপত্র একত্রে করে এই ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে। এই ভুয়া প্রশ্নপত্র কতিপয় ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম টিম বুধবার (১০ অক্টোবর) ৭টার দিকে রাজধানীর কাজলা পার, দনিয়া, যাত্রাবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে দুটি মোবাইল ও একটি বিকাশ রেজিস্টার খাতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া একই দিন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৯ টার দিকে বাড্ডা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বাড্ডা থানাধীন আলিফ নগর এলাকা থেকে তিনজনকে তিনটি মোবাইল ও দুটি ল্যাপটপসহ গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় আসামিদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল, দুইটি ল্যাপটপ ও বিকাশের বিন রেজিস্টার খাতা উদ্ধার করা হয়। মামলার তদন্ত বিষয়ে বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, এই মামলাটি তদন্তনাধীন আছে। আমরা আশা করি, প্রতারক চক্রের আরও বেশ কিছু সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে পারবো। বাংলাট্রিবিউন