পাকিস্তানে শিশু জয়নাব আনসারিকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ইমরান আলির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৭ অক্টোবর) সকালে তাকে লাহোরের কট লাখপাত কারাগারে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইমরানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময় জয়নাবের বাবা ও চাচা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি কোরআন ক্লাস শেষে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় পাঞ্জাবের কাসুরের সাত বছরের শিশু জয়নাব আনসারি। বাবা-মা সৌদিতে ওমরাহ পালনে যাওয়ায় কয়েকদিনের জন্য খালার বাড়িতে থাকা শিশুটির মরদেহ ৯ জানুয়ারি শহরের একটি আবর্জনার স্তুপে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় ধর্ষণের পর হত্যার শিকার সে। এক বছরের মধ্যে বারোতম শিশু হিসেবে ধর্ষণের শিকার হওয়া জয়নাবের মৃত্যুতে শুরু হয় বিক্ষোভ। কাসুরের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হলে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, জয়নাবের শরীরে পাওয়া সন্দেহভাজন অপরাধীর ডিএনএ নমুনাটি আগে ধর্ষণের শিকার হওয়া সাতটি শিশুর শরীরেও পাওয়া গিয়েছিলো। গত ২৩ জানুয়ারি ওই নমুনার সঙ্গে এক সন্দেহভাজনের নমুনা মিলে যাওয়ার পর পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন ইমরান আলী হলেন সেই অপরাধী। সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে শুরু হয় তার বিচার।
এ ঘটনায় জয়নাবের চাচা ও ভাইসহ মোট ৫৬ জন সাক্ষ্য দেন। প্রসিকিউটর জানান, ফরেনসিক রিপোর্ট ও পলিগ্রাফিক পরীক্ষায়ও প্রমাণ হয়েছে ইমরানই জয়নবকে হত্যা করেছে। চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে ইমরানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তাকে শিশু হত্যা,শিশু অপহরণ,শিশু ধর্ষণ এবং শিশুর সঙ্গে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।
ইমরান আলির মৃত্যুদণ্ডকে কেন্দ্র করে বুধবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কট লাখপাত জেলের চারপাশে পুলিশ ও দাঙ্গাবিরোধী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। রায় কার্যকর করায় সন্তোষ জানিয়েছেন জযনাবের বাবা আমিন আনসারি। তিনি বলেন, ‘হত্যাকারীকে আজ তার কর্মফল ভোগ করতে হলো।’ পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
ফাঁসি কার্যকরের পর ইমরান আলির মৃতদেহ কাসুরে নিয়ে গেছে তার পরিবার।