ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষার ফল বাতিল এবং ঢাবির উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে শিক্ষা সচিব ও ঢাবি উপাচার্যের প্রতি এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী নিজেই।
গত শুক্রবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। যে অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে ডিজিটাল জালিয়াতি হয়েছে। সমালোচনার মুখে পড়ে প্রথমে সোমবার এই পরীক্ষার ফল স্থগিত করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার ঠিকই ফল প্রকাশ করা হয়। অপরদিকে ইউনিটটিতে নিকট অতীতে সর্বোচ্চ ফলাফল হয়েছে, যা ক্ষেত্রবিশেষে দুই থেকে তিনগুণ। ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী এতে পাস করেছেন।
এমনকি ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম হওয়া ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে ফেল করেছিলেন। এই শিক্ষার্থীর নাম জিহাদ হাসান আকাশ। তিনি রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। এ নিয়ে শুরু হয় আরও সমালোচনা। প্রশ্নফাঁসের সন্দেহ আরও বাড়ে।
নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী ইউনুছ আলী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় এ বছর অংশ নেয় আমার মেয়ে। সে খুবই মেধাবী ছাত্রী, কিন্ত তাকে ফেল দেখানো হয়েছে। সে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী, ফেল করার মতো নয়।
নোটিশে বলা হয়, পত্রিকার মাধ্যমে জানা গেল যে, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কম মেধাবীদের পাস করানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত হলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার তথ্য প্রমাণিত হয়, এ জন্য প্রথমে রেজাল্ট স্থগিত রাখা হয়। পরে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু আপনারা যে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস করেছেন সেই প্রশ্নের ফলেই ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভিসির বিষয়ে নোটিশে বলা হয়, আপনি দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস করিয়ে দলীয় লোকদের পাস দেখিয়েছেন। আপনি আইন অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত নন।
ডিজিটাল জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
প্রশ্নফাঁসের পর নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানায় বাম ছাত্র সংগঠনসহ কয়েকটি সংগঠন। অনশন শুরু করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আখতার হোসেন। তিনি এখন অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন।