ওজন ও পরিমাপে কম দিলে জেল জরিমানার বিধান রেখে আইন পাস হয়েছে। এছাড়া ইমারত তৈরি বা মেরামতে ঘোষিত পরিমাপ লঙ্ঘন করলে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড বিল-২০১৮’ পাস হয়েছে।
প্রস্তাবিত এই আইনটি প্রণয়ন হলে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের দেশি ও বিদেশি বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলা যাবে বলে সরকার মনে করে।
জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এরআগে বিলটির উপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৮২ সালের ‘স্ট্যান্ডার্ড অব ওয়েট অ্যান্ড মেজার্স অর্ডিন্যান্স’ সংশোধন ও পরিমার্জন করে ২০০১ সালে নতুনভাবে প্রণয়ন হয়েছিল। এবার সেটি আবারও সংশোধন করা হলো।
বিলে অনুমোদনহীন বাটখারা (ওজন মাপার যন্ত্র) উৎপাদন, ব্যবহার ও পণ্যের ওজনে অনিয়মের সাজা বাড়ানো হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আর্থিক শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মানদণ্ডহীন বাটখারা বা পরিমাপক ব্যবহারের শাস্তি অনূর্ধ্ব একবছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে অর্থদণ্ড বাড়িয়ে একলাখ টাকা করা হয়েছে। বিলের বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ওজন বা পরিমাপন সম্পর্কিত মডেল অনুমোদনের সনদ ছাড়া তা বিক্রি, বিতরণ, সরবরাহের জন্য তৈরি করেন তাহলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা একলাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া ওজন বা পরিমাপন যন্ত্র বিক্রি করলে, উৎপাদন করলে একবছরের কারাদণ্ড বা একলাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বিলে বলা হয়েছে, অনুমোদনবহির্ভূত বস্তু দ্বারা ওজন বা পরিমাপন তৈরি বা উৎপাদন করলে একলাখ টাকা বা তিন বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। মানদণ্ড ব্যতীত, অন্য কোনো ওজন বা পরিমাপন বা সংখ্যমান ব্যবহার করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক মান সংস্থাসহ (আইএসও) অন্যান্য সংস্থাগুলোর নিয়মকানুন এ আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মানদণ্ড একক ছাড়া মুখের ভাষায় বা ভিন্নভাবে মূল্য বা চার্জ ঘোষণা করা যাবে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নিবন্ধন সনদ ছাড়া মোড়কজাত পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় এবং এলপিজি, এলএনজি বটলিং, টার্মিনাল, ফিলিং স্টেশন পরিচালনা করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে বিলে।