সংক্রামক ব্যাধির কথা গোপন রাখার পর এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে রোগের বিস্তার ঘটলে ওই ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদণ্ডে বা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
এই বিধান রেখে ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) বিল-২০১৮’ বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সংসদে পাস হয়েছে।
বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিলের ওপর দেওয়া বিরোধী দলের সদস্যদের সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা ঘটতে সহায়তা করেন বা স্থানের সংস্পর্শে আসার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি গোপন করেন, তাহলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে।
প্রস্তাবিত আইনে ২৩টি সংক্রামক রোগের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এভিয়ান ফ্লু, নিপাহ, অ্যানথ্রাক্স, মারস-কভ, জলাতঙ্ক, জাপানিজ এনকেফেলাইটিস, ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, শ্বাসনালির সংক্রমণ, এইচআইভি, ভাইরাল হেপাটাইটিস, টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহ, টাইফয়েড, খাদ্যে বিষক্রিয়া, মেনিনজাইটিস, ইবোলা, জিকা ও চিকুনগুনিয়া।
সুস্থ কেউ যাতে আক্রান্ত না হন সে জন্য কারও সংক্রামক রোগ হলে সেই তথ্য সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানানোর বিষয়ে প্রস্তাবিত আইনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিলে কোনো এলাকায় সংক্রমণ দেখা দিলে সেই জায়গাকে ‘সংক্রমিত এলাকা’ ঘোষণা করে সেখানে অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিধান রাখা হয়েছে।
রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্যাদি সরকার বিশুদ্ধ বা ধ্বংস করতে পারবে। রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সরকার দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে। সংক্রমিত স্থান বা স্থাপনা জীবাণুমুক্ত বা বন্ধ করতেও ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনো স্থাপনা জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব না হয় তবে তা সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে জানাতে হবে। সিভিল সার্জন সেটি ধ্বংস করার জন্য মালিককে নির্দেশ দিতে পারবেন। সরকার জীবাণুযুক্ত যানবাহন প্রয়োজনে জব্দ করতে পারবে।
কেউ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে সন্দেহ হলে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন বা সৎকার করতে হবে।
সংক্রামক ব্যক্তি রোগ সম্পর্কে জানার পরেও মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিলে সর্বোচ্চ দুই মাস কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।